আগামী শনিবারের মধ্যে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নিবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. ইলিয়াস মিয়া। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১১ টার সময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা কাবিটা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সাথে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মতবিনিময়।
সভায় তিনি আরও জানান, নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে। বাঁধের কাজে ধীরগতি কোন ভাবেই সহ্য করা হবেনা।
তিনি আরও বলেন, আমি সুনামগঞ্জে ৪/৫ মাসের মত হবে এসেছি। এখানকার পরিবেশ প্রতিবেশ সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নাই। সুনামগঞ্জ হাওর বাওরের একটি নীচু এলাকা। সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। বোরো ফসল হানী ঘটলে আমাদের পেটে ভাত পরবে না। কৃষক ও তাদের পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকবে কারণ তাদের একমাত্র সম্বল এই বোরো ফসল। সঠিক ভাবে আর দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে পিআইসিদের বিকল্প কোনো পথ নেই।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিসি ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। শুরুতেই ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অগ্রগতি ও বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরা হয়। জেলার ১২ টি উপজেলায় মোট ৬৮৬টি বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্কীম তৈরি করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভার মাধ্যমে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার ৩২টি হাওরের মধ্যে এখনও ১১টি বাঁধের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ৪টি বাঁধের কাজ সরাসরি পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে করা হচ্ছে। ৫টি কাজের পিআইসি সারেন্ডার করেছেন মর্মে মনিটরিং কমিটির সভায় জানা গেছে।
মনিটরিং সভায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সুনামগঞ্জ প্রতি ৩ বৎসর অন্তর অন্তর বন্যায় আশঙ্কা থাকে বিধায় এই অঞ্চলের ৯০ ভাগ মানুষের জীবিকার একমাত্র উপলক্ষ্য বোরো ফসল সুরক্ষায় ২০১৭ সালের পর থেকেই হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু প্রতি বছরই শত কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও মোট ৬৮৬টি বাঁধের বিপরীতে ১২৬ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও যথাসময়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মাটির অভাবে এখনো অনেক বাঁধের কাজ শুরুই করা যাচ্ছে না এমন কথাই জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নির্বাহী কর্মকর্তা। আবার গত বছরের বাঁধের কাজের টাকা এখনো না পাওয়া ও কোন কোন বাঁধে বরাদ্দ কম হওয়ায় অনেক পিআইসি কাজ করতে আগ্রহ হারানোর কারণ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কান্তি পাল, নির্বাহী প্রকৌশলী পওর-১, সুনামগঞ্জ মো. মামুন হাওলাদার, নির্বাহী প্রকৌশলী পওর-২, সুনামগঞ্জ মো. ইমদাদুল হক, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. মো. মল্লিক মঈন উদ্দিন আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. শেরে নুর আলী, ১২ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দসহ মনিটরিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ও প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর