যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ১৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি (এপিপিটি) প্রস্তাবিত ফুড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বিভিন্ন বিভাগের পিঠার স্টলে বাহারি রকমের পিঠা দেখা গেলেও অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি (এপিপিটি) প্রস্তাবিত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত স্টলে দেখা যায় একটি সাদা ব্যানারে লাল রং-এর লেখা অর্থাৎ রক্তাক্ত লেখায় "আমাদেরও অধিকার ছিল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করার"।
জানা যায়, ক্লাস পরীক্ষা বর্জন ও পিঠা উৎসবে উদ্যাপন থেকে বঞ্চিত করায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিনব প্রতিবাদের মাধ্যমে নিজেদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে এক শিক্ষার্থী জানায়,বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন করার অধিকার আমাদেরও ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন হচ্ছে অথচ আমরা উক্ত আয়োজন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। আমারও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এসব আয়োজনগুলোতে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা,আকাঙ্ক্ষা, অধিকার সবটাই আমাদের ছিল। কিন্তু সেই অধিকার থেকেও শিক্ষকরা আমাদের বঞ্চিত করেছেন। ভিসি স্যারের কথায় আমরা আশ্বস্ত হয়ে ক্লাসে ফিরলেও বিভাগের শিক্ষকদের নাটকীয় দাবি শুরু হয়। যার জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় উনারা। দফায় দফায় আমরা ক্লাসে ফেরার জন্য চেষ্টা করি, কিন্তু স্যাররা আমাদের ক্লাসে ফেরার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।আমরা চেয়েছিলাম ক্লাসে ফিরে শিক্ষক শিক্ষার্থী মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যাপন করবো। কিন্তু উক্ত উদ্যাপনের বিষয়ে ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। শিক্ষকরা আমাদের ক্যারিয়ার নিয়ে ছেলেখেলা শুরু করেছে, যা নিয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের জীবন নিয়ে আতঙ্কিত।
ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী ওবাইদুর রাহমান ফুয়াদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বলেন, সবকিছু ই ঠিক ছিল, সুন্দর সকাল শুরু হলো, স্টল গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম হঠাৎ চোখে পড়ল নিচের এটাচড দৃশ্য টা। অবাক হয়ে গেলাম, মিলাতে পারছি না। উপরের প্যারা টা কেনো লিখেছি জানেন? যাতে একটা স্টার্ক অনুভূতির ডিভিশন দেখাতে পারি, আমার আর আমার এপিপিটি /এফই বন্ধু-সিনিয়র ভাই দের। আমি পেলাম, তারা কি পাওয়ার অধিকার রাখে না? তারপর মনে হলো আচ্ছা যারা সিনিয়র তাদের কথা বাদ দেই, যারা নতুন স্বপ্ন নিয়ে ১ বছর কত শ্রম, সম্পদ বিসর্জন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিয়েছে ভার্সিটি ডে তে তারা অনাথ এর মত, তাদের ভিতরের কষ্ট মনে হয় না আমি ফিল করতে পারব, সম্ভব ও না। আর সিনিয়র ভাইরা? তারা কি মুখ নিয়ে তাদের জুনিয়র এর কাছে যাবে? নিন্দা জানাচ্ছি ভার্সিটি প্রশাসনকে এমন একটা প্যাথেটিক কাজ করার জন্য।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করে এপিপিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ডিপার্টমেন্টের নাম ও সার্টিফিকেট পরিবর্তন নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সমস্যা চলছে দীর্ঘদিন ধরে, তবে সমস্যা রিজেন্ট বোর্ডে প্রায় সমাধান হয়ে গেছে।বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য বিভাগের একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। উনি শিক্ষার্থীদের সাথে বারবার চেষ্টা করেন। তবে এপিপিটি বিভাগের স্টলে শিক্ষার্থীদের লাগানো বিষয়ে অবগত নয়।
উল্লেখ্য ডিগ্রি সংক্রান্ত জটিলতায় গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো: আব্দুল মজিদ এর (১৮ ডিসেম্বর) দেওয়া ডিগ্রি ও বিভাগের নাম ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং করার আশ্বাসে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। জানুয়ারি থেকে ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও একদিন ক্লাস নিয়ে আন্দোলনের জন্য মাফ চাওয়ার কথা বলা হলে শিক্ষার্থীরা মৌখিক মাফ চাইলেও শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরপরাধ ও অধিকার আদায়ের জন্য এ আন্দোলন ছিল বলে লিখিত মাফ চাওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়।যার ফলে ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দেয় শিক্ষকরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর