
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কনের বাড়িতে বরের বেশে হাজির ২০ যুবক। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে এমনই ঘটনা ঘটেছে ভৈরব উপজেলার গোছামারা গ্রামে।
এমন ব্যতিক্রমী বিয়ের ঘটনায় বর দেখতে বিয়েবাড়িতে হাজির হয় এলাকার শতশত উৎসুক শিশু, কিশোর ও নারী-পুরুষ। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। বরযাত্রীদের মধ্যে শেরওয়ানি পরে বিয়েবাড়ির গেটে ২০ জন বর হাজির হওয়ায় কে আসল বর সেটি না বুঝে গেট আটকাতেই বিপাকে পড়ে কনেপক্ষ।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কাজীপাড়ার বর্তমানে ভৈরব শহরের বঙ্গবন্ধু সরণির বিসমিল্লাহ টাওয়ারের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাসিস্টেন্ট পিআর আল আমিন মাহমুদ শিপনের ছেলে ছাব্বির হোসেন সজীবের সঙ্গে ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের গোছামারা গ্রামের মো. শাহ আলম মিয়ার মেয়ে জ্যোতি আক্তার স্বর্ণার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয় পারিবারিকভাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে শেরওয়ানি আর পাগড়ি পরে একসঙ্গে ২০ জন বর হাজির হন কনের বাড়িতে। এক বরযাত্রীতে এত বর দেখে অবাক কনে বাড়ির লোকজনসহ আগত অতিথিরা। ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতায় বিয়ের আয়োজনে সামিলদের আনন্দের মাত্রা ছিল বহুগুণ। ২০ বরের উপস্থিতি ঘিরে দিনভর উল্লসিত থাকে বিয়েবাড়ি।
বর ছাব্বির হোসেন সজীব জানান, তার বিয়েতে বন্ধুরা মিলে বরযাত্রী হিসেবে ২০ জন বর সেজে যান। এতে বিয়ের আনন্দটা অনেক বেড়ে যায়।
কনে জ্যোতি আক্তার স্বর্ণা জানান, তার বরের সঙ্গে আরও ২০ জন বর সেজে এসেছেন। ব্যতিক্রমী এই বরযাত্রার বিষয়টি খুবই ভালো লেগেছে।
বরের বন্ধু আল আমিন বলেন, জীবনে তো আমরা অনেক বরযাত্রী গিয়েছি, এবার আমার বন্ধু বিয়েতে বন্ধু ছাড়াও আমরা আরও ২০ জন বর সেজে এসেছি। ভীষণ ভালো লাগছে। আমার বিয়ের সময়ও এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করার ইচ্ছে রয়েছে।
বরের ছোট ভাই জানান, তার বাবা ও পরিবারের ইচ্ছে ছিল বড় ভাই সজীবের বিয়েতে ২০ জন বর সেজে যাবে। এই বিয়েতে ছোট ভাই হয়েও বড় সেজে যাওয়াটা অন্য রকম একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই বিয়েটাকে স্মরণীয় রাখার জন্যই এই আয়োজন।
বরের বাবা আল আমিন মাহমুদ শিপন বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে মানুষ বিভিন্নভাবে আনন্দ নিয়ে থাকে। আমার ইচ্ছে ছিল আমার ছেলের বিয়েতে একটু ব্যতিক্রমভাবে আনন্দ দেওয়ার। এজন্য এই আয়োজন করেছি। এমন আয়োজনে বরযাত্রী ও কনেপক্ষের সবাই অনেক আনন্দিত।
তিনি বর ও কনের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন। ভিডিওগ্রাফার খোকন মিয়া বলেন, আমি কয়েক হাজার বিয়ের প্রোগ্রাম করেছি। এই প্রথম বিয়েতে এত বর দেখে খুবই আনন্দ উপভোগ করেছি। বর দেখতে শতশত মানুষ গেটে ভিড় জমায়। আসল জামাই খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হয়। আসলে আমাদের এলাকায় এরকম বিয়ে এটাই প্রথম। সবাই মিলে উপভোগ করেছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এক বিয়েতে ২০ জন বর আসতে আগে কখনো দেখিনি। অনেক মজা লেগেছে বিষয়টা। প্রথমে আমরা একটু বিব্রতবোধ করলেও পরে সবাই জেনেছিলাম বরের বন্ধুরা বিয়ের পরিবেশটাকে একটু ব্যতিক্রমী করতেই এই আয়োজন করেছিল।
কনের দাদা বলেন, সত্যিই আয়োজনটা ব্যতিক্রম ছিল। বিষয়টি উপভোগ্য ছিল। এত বর থেকে আসল বর কে তা কনেই বেছে নেবে।
তিনি তার নাতনি ও নানতি জামাইয়ের জন্য দোয়া চান।
বাঁধন/সিইচা/সাএ