বান্দরবানের লামা উপজেলায় প্রকাশ্যে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফেয়ারী এগ্রোর বনজ ফলদ বাগানের গাছ, গরু-ছাগল, খামারের মাছ ও হাঁস সহ ১০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের সম্পদ লুটপাট হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানের এস্টেট অফিসার গোলাম মোস্তফা।
একইসঙ্গে বনজ-ফলদ বাগান, গরু-ছাগলসহ আরো ১০ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট চলছে বলে জানান তিনি। এ অবস্থায় উপজেলার সরই ইউনিয়নে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ সহ প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ করায় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বরত ব্যক্তিরা।
লিখিত এক বক্তব্যে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা এসব লুটপাট ও গাছ কাটার বিষয়টি প্রতি মুহুর্তে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), কেয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, লামা বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করে যাচ্ছি। লিখিতভাবে থানায় এজাহার দায়ের করেছি। কোনো প্রতিকার না পেয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।
বহু টাকা খরচ করে ফেয়ারী এগ্রো বাগান তৈরি, মৎস্য চাষসহ এগ্রো বেইজ কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকায় কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এ প্রতিষ্ঠানে শতাধিক কর্মচারী নিয়মিত কাজ করছেন। স্থানীয় লোকজনও এ এগ্রো বেইজ কার্যক্রমের মাধ্যমে উপকারভোগী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। গত বছরে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একটি সুযোগসন্ধানী ‘সন্ত্রাসীগোষ্ঠী’ সেখানে লুটপাট ও তান্ডব চালিয়েছে।
চিহ্নিত এসব লুটপাটকারীরা এগ্রো খামারে অব্যাহত খামারের অনুমানিক ৩ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২০০টি উন্নত জাতের গরু, প্রায় ১ কোটি টাকার গোদার মাছ, প্রায় ৫০ লাখ টাকার কয়েকশ ছাগল, আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা মূল্যের হাঁস- মুরগি লুটপাট করে নিয়ে গেছে। একইভাবে লুটপাটকারীরা ফেয়ারী এগ্রো বেইজের ২০০ একর জায়গার সেগুনসহ অন্যান্য জাতের মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে গেছে, যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে চিহ্নিত লুটপাটকারীরা। এখনো সেই লুটপাট অব্যাহত আছে।
এস্টেট অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনকে আমরা সময়ে সময়ে এসব বিষয়ে অভিযোগ আকারে জানিয়েছি। বর্তমানে স্থানীয় ও বহিরাগত সশস্ত্র লোকজন দিয়ে আগের কাটাগাছ গাড়িতে সড়কপথে দেশের বিভিন্নস্থানে পাচার করছে। এখনো এ গাছ কেটে পাচার অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি শেখ আহাম্মদ গুনু নামক একজন লুটপাটকারী ফেয়ারি বাগানের গাছ কেটে গাড়িতে (ঢাকা ল-২১৮) পাচারকালে গাড়িটি জব্দ করেছে বন বিভাগ। তারপরও প্রতিদিন অসংখ্য গাছ কেটে গাড়িতে করে কাঠ পাচার অব্যাহত রেখেছে।
বর্তমানে ফেয়ারী এগ্রোতে অবশিষ্ট গাছ, ছাগল-গরুসহ ফলদ ও বনজ বাগানের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ লুটপাটের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। লুটপাটকারীরা ফেয়ারী এগ্রো বেইজের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত কর্মচারী ও অন্য লোকজনকে বাগান ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নানা ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে আসছে। এতে বাগানের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’
এস্টেট অফিসার বলেন, ‘লুটপাটকারীরা দেশের বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রশাসনকে বিতর্কিত করার জন্য এ লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করি। লুটপাটকারীরা ফেয়ারী এগ্রো কমপ্লেক্সে সন্ত্রাসী কায়দায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে।
তারা বলে বেড়াচ্ছে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে। এ বাস্তবতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি তাদের লুটপাট বন্ধে এগিয়ে না আসে, তবে এ লুটপাটের ধারা বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর