শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি বেকিকুড়া এলাকায় চেল্লাখালী নদীতে বোরো আবাদের সেচের জন্য স্থাপিত বৈদ্যুতিক মোটরের প্রায় ৪০০ ফুট লম্বা কাগজের ফিতা পাইপ রাতের আধারে কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। 

রোববার (২৬ জানুয়ারি) গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে। এতে চলতি বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকার কৃষকরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের সৃষ্ট বন্যায় কৃষকের গত আমান ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। একইসাথে ক্ষতিগ্রস্থ হয় বোরো সেচ সরবরাহের ড্রেন। ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামে কৃষক। চলতি বোরো আবাদে সেচের পানি সরবরাহ করার জন্য পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বেকিকুড়া গ্রামের কৃষক আমির হোসেন ওই গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত চেল্লাখালী নদীতে সাড়ে সাত ঘোড়া পাওয়ার সম্পন্ন একটি বৈদ্যুতিক মোটর স্থাপন করেন।

মোটর মালিক আমির হোসেন জানান, গত প্রায় ৩০ বছর যাবত তিনি বেকিকুড়া, বোনারপাড়া ও কয়রাকুড়ি মৌজার প্রায় ৪০/৫০ জন কৃষকের ৫০/৬০ একর বোরো জমিতে সেচ সরবরাহ করে আসছেন। চলতি বোরো আবাদে ইতোমধ্যে তার মোটরের সেচের পানিতে ১৫ একর জমি লাগানো হয়েছে। ৩০ একরের মতো জমি ভেজানো হয়েছে। বাকি আছে প্রায় ১৫/২০ একর জমির মতো। আবাদের এই মোক্ষম সময়ে রাতের আধারে র্দুবৃত্তরা মোটরের ফিতা পাইপ কেটে ফেলায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গ্রামের কৃষকরা। ভবিষ্যতে ক্ষতির কথা চিন্তা করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন কৃষক আমির হোসেন।

ওই এলাকার কৃষক খোরশেদ আলী বলেন, বন্যায় সেচ ড্রেনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ওই ড্রেনের বেশ কিছু অংশে ১২ ইঞ্চি মাপের প্লাস্টিক কাগজের ফিতা পাইপ জোড়া দিয়ে সেচের পানি সরবরাহ করছিল সেচ মালিক আমির হোসেন। কিন্তু রোববার রাতের আধারে একদল দুর্বৃত্ত প্রায় ৪০০ ফুট লম্বা পাইপ কেটে ফেলেছে। এতে সোমবার সকাল থেকে সেচমোটর বন্ধ রয়েছে। ক্ষেত লাগানো পিছিয়ে যাওয়ায় কৃষক দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

অপর কৃষক নুরুল আমীন বলেন, আমি ৭ দিন হয়েছে ক্ষেত লাগিয়েছি। ক্ষেতে পানি না থাকায় আগাছানাশক স্প্রে করতে পারছি না। এমনকি অনেক কৃষক ধানের চারা তুলে রেখেছে জমি তৈরি করতে না পেরে ক্ষেত লাগাতে পারছে না। তিনি বলেন, যারা মোটরের পাইপ ধ্বংস করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

মুনতাসির/সাএ