ষাটোর্দ্ধ বয়সি মিন্নাত আলী (৬২) এনজিও থেকে কিস্তি নিয়ে ভ্যান কিনেছিলেন। সেই ভ্যান চালিয়ে পরিবার নিয়ে ভালোই ছিল মিন্নাত আলীর পরিবার। তবে হঠাৎ তার শরীরে বাসা বাধে রোগ। পচন ধরে পায়ের আঙ্গুল থেকে উপরের দিকে।
ডাক্তার বলেছে পা কেটে ফেলতে হবে। তাইতো তিনি এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন কিভাবে চিকিৎসা করাবেন ভেবে। আবার পা কেটেই তিনি কিভাবে সংসার চালাবেন। এই সকল চিন্তায় যেন তার মরণ ডেকে নিয়ে আসছে। মিন্নাত আলীর বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের গাওপাড়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে।
পরিবারে তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে সন্তান রয়েছে। তবে কস্ট করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে বিয়ে করে কোন মতে তার সংসার চালায় বাবা মাকে দেখার মত সামর্থ নাই। তাইতো মিন্নাত আলী কিস্তি নিয়ে ভ্যান কিনে সেটির আয় রোজগার দিয়ে কোন মতে তারা স্বামী স্ত্রী দুজনে দুমুঠো ভাত খেয়ে বাচার চেস্টা করছিলেন।
তবে বছর খানেক আগে ভ্যান চালানো আবস্থায় হঠাৎ তার পায়ে একটি পাতা পড়ে চুলকাতে থাকে। তারপর থেকে শুরু হয় পায়ে জালা পোড়া। তিনি স্থানীয় ডাক্তারসহ হাসপাতালে গেলে তারা চিকিৎসা দেন। তবে সুস্থ্য হননি সেই সকল চিকিৎসায়। বর্তমানে চেপে বসেছে পচন রোগ। পরে স্থানীয় কয়েকজন তার এমন অবস্থা দেখে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার দেখালে ডাক্তার বলেন তার পা কেটে ফেলতে হবে।
তবে তার জন্যও টাকার প্রয়োজন। যা তার সামর্থের বাইরে। আবার পা কেটে ফেললেও তিনি কি করে জীবিকা নির্বাহ করবেন তাও চিন্তার বিষয়। স্থানীয় বাসিন্দা মিলন আলী জানান, ছোট বেলা থেকে দেখছি লোকটা খ্বু ভালো। সারাদিন এই এলাকায় ভ্যান চালায়। দুপুরে ভাতো খায়না সিংগাড়া বা হালকা কিছু খেয়ে থাকে। হঠাৎ তিনি গুরত্বর অসুস্থ্য হয়ে গেলে আমরা কয়েকজন যুবক মিলে তাকে ডাক্তার দেখাই। তবে ডাক্তার বলেছে তার পা কেটে ফেলতে হবে।
কিন্তু তাতেও টাকার প্রয়োজন।শনিবার সকালে উপজেলার লোকমানপুর বাজারে কথা হয় ওই ভ্যান চালক মিন্নাত আলীর সাথে। তিনি অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলেন, আমার জাগা জমি কিছুই নাই। কিস্তি তুলে ভ্যান কিনে কোন মতে বউডাক লিয়া খাচ্চুনু। কিন্তু আমার এত বড় অসুখ হইচে। ডাক্তার কইচে পা কেটে ফেলতে হবি। আর ভ্যান চালানো যাবিনা রেস্টে থাকতে হবি। একুন আমি কি করবো। আমি কি কইরি চিকিৎসা করাবো আর কি খাবো আবার কিস্তিই দিবো কি করে।
আমার তো মরণ ছাড়া উপায় নাই। তাই তো তিনিসহ স্থানীয়রা তার চিকিৎসা এবং জীবিকা নির্বাহ করে বেচে থাকার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর