রবিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। রবিবার রাতেই এমন একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভাইরাল ওই সব ভিডিওতে দেখা যায়, হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেন শিক্ষার্থীরা। সেসময় শিক্ষার্থীদের পরিস্থিতি শান্ত করতে অনুরোধ করতে দেখা যায় হাসনাতকে।
তিনি তাদের চলে যেতে অনুরোধ করছিলেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, “একটা ছেলেও আসবা না।”
কয়েকটি ভিডিওতে তাকে দেখা যায় তিনি পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা বলছেন। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রদের মধ্য থেকে হাসনাত আব্দুল্লাহকে লক্ষ্য করে অনেকে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি দ্রুত কোথাও হেঁটে যাচ্ছেন, এ সময়ও তার হাত ধরেছিল কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় ঠিকমত চোখ খুলতে পারছিলেন না হাসনাত।
সকাল থেকে এ বিষয়ে কথা বলতে হাসনাত আব্দুল্লাহর সাথে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি হাসনাত আব্দুল্লাহকে।
তবে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেককে হাসনাত আব্দুল্লাহর প্রশংসা করতে দেখা গেছে। নিজের জন্য বিপদজনক জেনেও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ থামাতে ঘটনাস্থলে যাওয়া এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন নেটিজেনরা।
জেন জি নামক ভেরিফায়েড পেজে হাসনাতের সাহসিকতার প্রশংসা করে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই ছেলেটাকে যারা ট্রল করতাছে বা ভিডিও বানাচ্ছে তাদের এটা বুঝা উচিত এই ছেলেটা জানে এই গ্যাঞ্জামের মধ্যে তাকে যেকোনো সময় মেরে ফেলতে পারে। তারপরও সে বের হয়েছে কিন্তু সে বের না হলেও পারতো, তার মানে বুঝা যায় এই ছেলেটা তার মৃত্যু বা তার জীবনের কোনো পরোয়া করে না।
এখানে তাকে বাহবা দেওয়াটাই মানায়। রাজনৈতিক কোনো নেতা এরকম সংঘর্ষের মধ্যে কখনো আসবে না কারণ তাদের জীবনের প্রতি মায়া আছে এবং সহমত পোষণকারী ওই পোলাপানদের ছেড়ে দেয় যে তোরা মরে যা সে ক্ষেত্রে এই ছেলেটা হাজারগুন বেটার। বেঁচে থাকলে নেতা হওয়ার ক্ষমতা এরাই রাখে।
বিল্লাল হোসাইন সাগর নামের একজন লিখেছেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর কাজ শুধুই টেন্ডার বাজি করা! শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষ সংঘাত নিয়ন্ত্রণে তাদের ভূমিকা কি? গতকাল ছাত্রদল ও শিবির সভাপতি ঘটনাস্থলে ঝাঁপিয়ে পড়লে পুলিশ ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যেত। অথচ শুধু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গিয়েছে হাসনাত আব্দুল্লাহ। দুইপক্ষের মারামারি সামলাতে গিয়ে মার খায় না, এমন নজির নেই সমালোচনাতো সামান্য বিষয়। কথা হচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে শীর্ষ ছাত্রসংগঠনের নেতারা কেন ঘরে ঘুমিয়ে থাকে?
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর