কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড আড়পাড়া গ্রামের পরামানিক পাড়া থেকে দরগা হয়ে বিহারী মোড় পর্যন্ত পাকা সড়কে একটি কালভার্ট সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। তবে এখন পর্যন্ত কালভার্টটি পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ওই এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের পাশ দিয়ে পরামানিক পাড়ায় ঢুকতেই এই কালভার্টটি পার হতে হয়। গেল বর্ষায় পৌর কর্তৃপক্ষ পায়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল করার জন্য এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে পূর্ব থেকেই ভাঙ্গন অবস্থায় থাকা কালভার্টটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলেছিল। এরপর দ্রুত কালভার্ট পুনঃনির্মাণের কথা বলে পৌর কর্তৃপক্ষ একটি অস্থায়ী বাঁশের সেতু তৈরি করেছিল।

কিন্তু সময়ের সাথে বাঁশের সেতুটি বর্তমানে সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই বাঁশের সেতু ব্যবহার করে পথচারী, বাইসাইকেল ও মোটর সাইকেলসহ হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারলেও এটি ভারী যানবাহনের চলাচলের উপযোগী নয়।

এসব যানবাহনকে অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয় করে দীর্ঘ পথ ঘুরে আড়পাড়ার ভেতরে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। পৌরসভা এলাকার মধ্যে আড়পাড়া গ্রামে প্রবেশের অন্যতম চওড়া সড়কটি এবং বাঁশের সেতু ভেঙে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

কালভার্টের পাশের চা দোকানী দীপঙ্কর সাহা জানান, "প্রায় ৫ মাস হলো পৌরসভার লোকজন এসে কালভার্টটি ভেঙে বাঁশের সেতু করে দিয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত পৌরসভার কেউ এসে খোঁজ নেয়নি বাঁশের সেতুর কি অবস্থা। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই সেতুর কারণে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায় কিন্তু পৌরসভা নেবে না। আমরা বাঁশের সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছি। অতিসত্বর বাঁশের সেতুর স্থানে কংক্রিটের কালভার্ট নির্মাণ করে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ কমাতে পৌর কর্তৃপক্ষকে কাজ শুরু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।"

এ সড়ক দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বহনের একমাত্র চলাচলের ভরসা। দিন রাত সর্বসময় ছোট-বড় যানবাহন ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে থাকেন। কিন্তু কালভার্টের ভেঙে যাওয়ার কারণে এলাকার মানুষ বিভিন্ন বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী কবির হাসান জানান, "ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক সিক্স লেন প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ যে জায়গা রাস্তার দুই ধারে অধিগ্রহণ করছে, সেই জায়গার মধ্যে পড়েছে পরামানিক পাড়ার কালভার্টটি। যার কারণে পৌরসভার পক্ষ থেকে এখানে নতুন করে কালভার্ট নির্মাণের সুযোগ নেই। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওই জায়গায় উন্নত মানের আধুনিক ড্রেন নির্মাণ করে দেবে, যার ওপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে।"

তবে, তিনি আরও বলেন, "এলাকার লোক যদি বর্তমানে বাঁশের সেতুটি সংস্কারের জন্য পৌরসভায় লিখিত আবেদন করেন, তাহলে সেতুটি সংস্কার করা হতে পারে।"

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পৌর প্রশাসক দেদারুল ইসলাম জানান, "আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি। অতিসত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সালাউদ্দিন/সাএ