জিডিপি তে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদান রাখা ৭০ লক্ষ দোকান ব্যবসায়ীরা প্রায় ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থান করে থাকে। ভ্যাট প্রদানে তারা বিরোধী না। তবে ভ্যাট আদায় সহজীকরণ করে ভ্যালু অ্যাডেড % হার নির্ধারণ করে তার উপর দোকান ব্যবসায়ীরা ভ্যাট প্রদানে ইচ্ছুক।
এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সাগর-রুনি মিলনায়তন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সভাপতি বলেন, জুলাই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের আন্দোলনে আবু সায়ীদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম সহ বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচারের আমলে গুম খুনে নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত ও সকল আহত ছাত্র জনতার রোগমুক্তি কামনা করছি। তার সাথে সাথে, জুলাই আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের আন্দোলনে ও বিগত ১৬ বছরে গুম খুনের/গণহত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের বিচারের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন শুরু করছি।
আপনারা অবগত আছেন যে, বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি বিগত স্বৈরাচার সরকারের সমর্থক দোকান মালিক সমিতির সাথে একমত পোষণ না করার কারণে ২০২০ সালে দোকান ব্যবসায়ীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করে।
কারণ একজন ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী পাঁচটি খাতা সংরক্ষণ পূর্বক ভ্যাটের হিসাব নির্ণয় করা সম্ভব নয়। যদি তা করতে হয় তাহলে তাঁকে একজন লোক বা উকিলের শরণাপন্ন হতে হবে যা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার।
প্রায় ৭০ লক্ষ দোকান ব্যবসায়ীর বর্তমান টিকে থাকাই যেখানে কষ্টসাধ্য। সেখানে ভ্যাট বৃদ্ধি দোকান ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বর্তমানে ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীগণ সুদ বৃদ্ধির কারণে ঋণ ক্ষেলাপিতে পরিণত হওয়ার পথে অতএব, ক্ষতিগ্রস্থ দোকান ব্যবাসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১% ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারীর দাবী করছি।
আইন অনুযায়ী ৫০ লক্ষ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ী ভ্যাটের আওতার বাইরে! কিন্তু এনবিআর সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শপিং মলে অবস্থিত দোকান ব্যবসাকে এর আওতার বহির্ভূত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ৩০ লক্ষ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটের আওতার বাইরে রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা পূর্বেও করেছি বর্তমানেও করছি। আমরা চাই প্রত্যেকটি পণ্যের উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে এমআরপি নির্ধারণ পূর্বক ভ্যাট আদায় করা হোক। এতে দোকান ব্যবসায়ী ও ভোক্তা ভ্যাট নামে হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবে।
ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীরা বছরের ১০ মাসে গড়ে যাহা বিক্রি করিয়া থাকে। ঈদুল ফিতরের মাসে। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি বিক্রি করে থাকে। এই কারণে কিছু অসাধু ভ্যাট কর্মকর্তা ঈদুল ফিতরের মাসে ভ্যাট অভিযানের নামে উক্ত মাসকে বেছে নিয়ে দোকান ব্যবসাকে ১২ মাসে গুণ করে ভ্যাট আদায়ের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে থাকে। তাই আমরা ঈদুল ফিতরের মাস ব্যতীত অন্য যে কোনও মাসে ভ্যাট অভিযান পরিচালিত করার দাবি করছি।
দোকান ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্তি না হওয়ার কারনে সকল প্রকার ব্যাঙ্ক ঋণ ও সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। অতএব দোকান ব্যবসাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
এই সময় সংগঠনের সভাপতি কিছু দাবি পেশ করেন। আমাদের দাবিগুলো হল:-
১) সকল পণ্যের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার পূর্বক ৫০ লক্ষ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রেখে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শপিং মলে অবস্থিত দোকান সহ সকল দোকানের ক্ষেত্রে কার্যকর করার দাবি করছি।
২} উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে এমআরপি নির্ধারণ পূর্বক ভ্যাট আদায় করার দাবি করছি। ঈদুল ফিতরের মাস ব্যতীত অন্য যে কোনও মাসে ভ্যাট অভিযান পরিচালিত করার দাবি করছি।
৩। ক্ষতিগ্রস্থ দোকান ব্যবাসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১% ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারীর দাবী করছি।
৪) দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোগ্য পণ্যের দাম নির্ধারণে। দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তির দাবি করছি।
৫) দোকান ব্যবসাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর