শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে মালয়েশিয়ার এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিড় বেড়েই চলেছে। ২০২৩ সালের জুলাই বিপ্লবের পর মালয়েশিয়ায় প্রবাসীরা তাঁদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠানোর বিষয়ে আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৈধপথে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া বর্তমানে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে, যেখানে গত বছর ছিল সপ্তম। ২০২৪ সালের প্রথম মাসের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত শুধু এনবিএল রেমিট্যান্স হাইজ থেকে প্রবাসীরা ১৬ মিলিয়ন ডলার, প্রায় ১ হাজার ৯৮৩ মিলিয়ন টাকা বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন।
এছাড়া, প্রবাসীরা তাঁদের দাবি জানিয়েছেন যে সরকারকে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রণোদনা বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ থেকে পাঁচ শতাংশ করতে হবে। তাঁদের মতে, অন্যান্য খাতে ১০ শতাংশ লাভের আশায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়, অথচ প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়, যার পরিমাণ বছরে মাত্র ৭ হাজার কোটি টাকারও কম। যদি সরকার প্রবাসীদের জন্য পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা দেয়, তবে এতে সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না, বরং সরকার লাভবান হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের মতো দেশ তাঁদের প্রবাসী নাগরিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালে ভারত ১৪৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে, কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে-যা সরাসরি বিনিয়োগের তুলনায় অনেক বেশি।
বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারের উচিত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করে দক্ষ, অদক্ষ, আধা দক্ষ এবং শিক্ষার্থী হিসেবে বিদেশে কর্মসংস্থান ব্যবস্থা তৈরি করা। এর ফলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে, যা বর্তমানে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং ফিলিপাইন এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং তাঁরা শুধুমাত্র অদক্ষ শ্রমিকই নয়, উচ্চ দক্ষ কর্মীও বিদেশে প্রেরণ করছে, যেমন-বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আলফাবেট ও গুগলের সিইও, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক, প্রকৌশলী, অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
প্রবাসে বাংলা এর সর্বশেষ খবর