বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভিডব্লিউবি কার্ডধারীদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও টিসিবি কার্ডধারীদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিতরণ এবং হতদরিদ্র অসহায় শীতার্থদের কম্বল দেওয়ার কথা থাকলেও তা পাচ্ছে না তারা। প্যানেল চেয়ারম্যান আসমা তারার ভেলকিবাজীতে এ সকল অনুদান চলে যাচ্ছে তার নির্দিষ্ট লোকের কাছে। টিসিবির কার্ড অনলাইন করতে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান আসমা তারার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী স্থানীয়রা জানান, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের বৈষম্য ও স্বৈরাচারীতায় অতিষ্ঠ ইউপি সদস্যসহ সেবা গ্রহীতারা। গত ১৩ জানুয়ারি প্যানেল চেয়ারম্যান আসমাতারার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি সহ নানা অভিযোগের বিষয়ে অনাস্থা জানিয়ে ইউপি সদস্যরা গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত চলছে। প্যানেল চেয়ারম্যান আসমাতারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। টিসিবি কার্ডধারী ভ্যানচালক আরিফ হোসেনকে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আসমাতারাসহ তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কামরুন্নাহার নামের এক ভিডব্লিউবি কার্ডধারীদের চাউল তুলে নেওয়ার অভিযোগ আসমা তারার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার চাউল নিতে গেলে চাউল না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তার নামের চাউল উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমন ১১ জনের চাউল উঠিয়ে নিয়েছে আসমা তারা ও তার লোকজন। এছাড়াও প্রতিবন্ধী কার্ড বাতিল ও পরিষদের বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা গ্রহীতারা।
ইউপি সদস্য মহিবুল ও শাহাবুদ্দিন অনাস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, আসমাতারা প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভিডব্লিউবি, টিসিবি ও সরকারি অনুদান থেকে শুরু করে সকল কাজে অনিয়ম করেছে এবং ইউনিয়নবাসী সঠিক সেবা পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান আসমা তারার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ইউপি সদস্য মহিবুল্লাহ ও শাহাবুদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন ষড়যন্ত্রমূলক এ সমস্ত অভিযোগ করছে। ভ্যানচালক আরিফ হোসেনকে মারধরের করা ও কামরুন্নাহারের চাউল উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তার জানা নাই।
গাংনী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহ জানান, ওই প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অন্যান্য ইউপি সদস্যরা অনাস্থা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। টিসিবি কার্ড অ্যাকটিভ করতে গিয়ে একজন সেবা গ্রহীতা হেনস্থার শিকার এবং ভিডব্লিউবি কার্ডধারীর চাউল উঠিয়ে নেওয়া সহ তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আছে সে সকল বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর