• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৬ সেকেন্ড পূর্বে
মো: সাইফুল ইসলাম
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১:৩৯ রাত
bd24live style=

সরকার যেন সিন্ডিকেটের ফাঁদে পা না দেয়, উন্মুক্ত হোক জনশক্তি রপ্তানী বাজার

ছবি: নিজস্ব প্রতিবেদক, বিডি২৪লাইভ

দেশের এক তৃতীয়াংশ জনগণ সরাসরি জনশক্তি রপ্তানির উপর নির্ভরশীল, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সিংহভাগ আসে অভিবাসী কর্মীদের প্রেরিত রোজগার থেকে। বিগত স্বৈরাচারী ও বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু ভুলনীতি ও কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী, লোভী, অপরাধী ও ষড়যন্ত্রকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই সেক্টরটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছে। 

সম্মিলিত সমন্বর ফ্রন্টের উদ্যোগে জনশক্তি রপ্তানী সেক্টরে বিভিন্ন অনিয়ম ও বৈষম্যমূলক নীতি ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক বিভিন্ন কালা কানুন ও মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানি ও সৌদি আরবে একক ভিসায় সত্যায়ন বিহীন ডিমান্ডের অনুকূলে বর্হিগমন ছাড়পত্র বন্ধের প্রতিবাদে এবং কতিপয় ট্রাভেল এজেন্সি করতে টিকেট সিন্ডিকেট করে টিকেটের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটের সাগর-রুনী মিলনায়তনে।

স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে আজকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই সংবাদ সম্মেলনে শুভেচ্ছা জানানোর পর তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসবাদ প্রতিষ্ঠাকারি ও গনতন্ত্র হত্যাকারি শেখ হাসিনা সরকারের ১৬টি বছর ছিলো বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। কথা বলার অধিকার ছিলোনা, সভা সমাবেশ করার অনুমতি ছিলো না, ছিলো না কোন বাকস্বাধীনতা।

আপনাদের খুরদার, তাৎপর্যপূর্ণ ও তথ্যবহুল লিখনি ও প্রচারের মাধ্যমে সমগ্র জাতি ছাত্রজনতার সাথে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে না পড়লে হয়তো আজও আমার স্বৈরাচার মুক্ত হতে পারতাম না জনশক্তি রপ্তানির পুরো বাজারটাই স্বৈরাচারের দোষরেরা জিম্মি করে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা এই সেক্টর থেকে লুটপাট করেছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপনাদের অবদানের কথা জাতির সাথে সাথে আমরা জনশক্তি রপ্তানিকারকেও আজীবন কৃতজ্ঞচিত্তে
শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবো।

আপনারা জানেন জনশক্তি রপ্তানি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে নিয়ে একদিকে দেশের দারিদ্রতা ও বেকারত্ব দুর হচ্ছে অন্যদিকে আমরা অনুন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হয়েছি আর্থসামাজিক অবস্থার ও উন্নতি হয়েছে। 
আপনারা জানেন ২০১৭/১৮ ও ২০২২/২৪ সালে সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড দাতু শী মোহাম্মদ আমিন রহুল আমিন স্বপন, মোহাম্মদ নূর আলী মিলে প্রথমে ১০টি পরে ১০০টি রিকুটিং এজেন্সি নিয়ে একটি সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠা করে। এই সিন্ডিকেট সদস্যদের বাহিরে অন্য কোন রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়াতে কর্মী রপ্তানি করতে পারতো না। দুই পিরিয়ডে সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড ও তাদের সদস্যরা এই সেক্টর থেকে অতিরিক্ত আদায় করেছে প্রায় ১১২৬৮ হাজার কোটি টাকা। স্বৈরাচারী সরকার এদের কোন বিচার করেনি, কারণ তাদের আশ্রয়ে আসছে ও প্রত্যক্ষ সমর্থনে সিন্ডিকেট হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ও তাদের কোন বিচার করেনি এই বিচারহীনতার কারণে সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড আমিন, স্বপনেরা পুনরায় মালয়েশিয়াতে সিন্ডিকেট করে অভিবাসী কর্মী রপ্তানি করার চেষ্টা করছে।

আমরা এই সংবাদ সম্মেলনে আপনাদের মাধ্যমে অতি সংক্ষেপে এই সেক্টরের অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যা ও তার সমাধানের কিছু পরামর্শ জাতির বিবেকবান প্রতিটি নাগরিক ও সরকারের নিকট তুলে ধরছি সাথে সাথে সমস দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করার জন্য আকুল আবেদন জমাচ্ছি।
১. সিন্ডিকেট:
সিন্ডিকেট একটি ঘৃণিত ও সভ্য সমাজে প্রত্যক্ষিত। সিন্ডিকেট যেখানে শোষণ, বৈষম্য ও দুর্নীতি সেখানে। মুষ্টিমেয় জনশক্তি রপ্তানিকারক অতি দ্রুত ধনী হবার জন্য সকল নিয়ম নীতি, নৈতিকতা, মানবিকতা ও আইনকানুনকে তোয়াক্কা না করে, ঘুষ বাণিজ্য ও স্বৈরাচারী সরকারের রাজনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থে সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়ান শ্রমবাজার দখল করে নেন। ফলশ্রুতিতে অভিবাসন ব্যয় পূর্বে তুলনায় কয়ে গুন বেড়ে যায়, অধিকাংশ জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসা বঞ্চিত হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়, দেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণন হয়, হাজার হাজার কর্মী আটকা পড়ে যায় এবং আঁতুরঘরে বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এই নিয়ে অনেক আন্দোলন, সংগ্রাম, লেখালেখি, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম হয়েছে কিন্তু ফলাফল শূন্য।
স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে, দেশপ্রেমিক অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু মন্ত্রনালয় ও বিএমইটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মকান্ডে কোন পরিবর্তন হয়নি। বরং মনে হচ্ছে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের প্রেতআত্মা এখনো মন্ত্রনালয় ও বিএমইটির প্রতিটি টেবিলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি ঐ চিহ্নিত চক্রটি পুনরায় সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়াতে জনশক্তি রপ্তানি করার পাঁয়তারা করছে এবং তাদেরকে নাকি আমাদের মন্ত্রনালয়ের কেউ কেউ সহযোগিতা ও করছেন। বাজারে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে তারা অর্থ দিয়ে, রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে, বিভিন্ন রকম কুটকৌশল অবলম্বন করে অন্তবর্তীকালীন সরকার থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়াতে কর্মী রপ্তানির অনুমতি নেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বিগত পতিত স্বৈরাচারী শাসক শত শত কোটি টাকার বিনিময়ে রুহুল আমিন স্বপন ও দাতু শ্রী মোহাম্মদ আমিনকে সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করার সুযোগ দিয়েছে। এবার যদি অন্তবর্তীকালীন সরকার সিন্ডিকেটে মাধ্যমে মালয়েশিয়াতে কর্মী রপ্তানির সুযোগ দেন, তাহলে তাদের সাথে স্বৈরাচারী সরকারের পার্থক্য কোথায়?

২. টিকেট সিন্ডিকেট: 
শোষন, নির্যাতন, লুটপাট ও দুর্নীতির আরেক নাম টিকেট সিন্ডিকেট।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ অভিবাসী কর্মী, ব্যবসায়ী, ভ্রমণকারী, ছাত্র ও অসুস্থ রুগীরা চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। অভিবাসী কর্মী, ভ্রমণকারী, ব্যবসায়ী ছাত্র ও চিকিৎসার জন্য যে সমস্ত রোগীরা বিদেশে যায় তারা একশ্রেণীর অসাধু ট্রাভেল এজেন্সি ও এয়ারলাইন্সের কাছে আজ জিম্মি হয়ে আছে।
নামে, বেনামে অগ্রীম বুকিং দিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে তারা টিকেটের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে মুজার হাজার কোটি টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। ভারত থেকে যে দুরত্বের ভাড়া ২০/২৫ টাকা, ঢাকা থেকে সেই দূরত্বের ভাড়া ৭০/৮০ হাজার টাকা। বাংলাদেশ থেকে ৮০% যাত্রী বিদেশি এয়ারলাইন্স গুলো বহন করে থাকে। কিছু সংখ্যা অসাধু ও দুর্নীতিপরায়ণ ট্রাভেল এজেন্সী ও বিমানের কিছু কমকর্তা ও কর্মচারী এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। তাদের কারণে বিদেশগামী যাত্রীরা লুন্ঠিত হচ্ছে এবং দেশ থেকে বিদেশী এয়ারলাইন্স গুলো প্রতিবছর শত শত মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছে।
আমরা অবিলম্বে এই সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে দিয়ে প্রতিটি রুটে যৌক্তিক ভাড়া ও অভিবাসী কর্মীদের জন্য লেবার ফেয়ার চালু করার দাবি জানাচ্ছি। 

বিগত ০২/০১/২০২৫ ইংরেজি তারিখে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিটা চাহিদা পত্র দূতাবাস থেকে সত্যায়ন করা বাধ্যতামূলক করে দেন। এতে করে হাজার কর্মী ও শত শত রপ্তানিকারক ভীষণ বেকায়দায় পড়ে যায়। দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা এত নগণ্য যে তাদের পক্ষে এই বিশাল অংকের চাহিদা যাচাইবাছাই করতে কয়েক মাস লেগে যাবে। সত্যায়ন করতে করতে কর্মী চাহিদা ও শেষ হয়ে যাবে। এই ধরনের হয়রানি হলে নিয়োগকর্তা বাংলাদেশ থেকে কর্মী আনা বন্ধ করে দিবে। এমনিতেই আমাদের মন্ত্রণালয় ও বি.এম. টির অনেক আনুষ্ঠানিকতার কারণে বাংলাদেশ থেকে একটা কর্মী বিদেশে যেতে অনেক সময় লেগে যায়। যার কারণে অনেক নিয়োগকর্তা আমাদের দশ থেকে শ্রমিক আমদানি না করে অন্যান্য দেশে থেকে আমদানি করে। সরকারের এই প্রজ্ঞাপনের ফলে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকেরা শ্রমিক রপ্তানি করতে পারছে না। নিয়োগকর্তারাও বাংলাদেশের ব্যপারে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছে। বাজার চালু রাখার স্বার্থে, অভিবাসী কর্মী ও রপ্তানিকারকদের হয়রানি বন্ধ করার জন্য পূর্বে নিয়মে বহির্গমন ছাড়পত্র দেওয়া জন্য আমরা সরকারের নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
এই ব্যাপারে আমরা ডিজি বিএমইটি, সচিব ও মাননীয় উপদেষ্টার নিকট আবেদন ও স্বাক্ষাত করেও কোন সাড়া পায়নি । উনারা মিটিং আশ্বাস দিলেও কোন প্রকার কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। এইভাবে চলতে থাকলে বাজার সংকুচিত হয়ে যাবে, বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে যাবে এবং দেশ বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। আর কোন কালক্ষেপণ করা যাবেনা। সরকার কোন ইতিবাচক সাড়া দিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য মাঠে নামতে বাধ্য হবো।

আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার অভিবাসী কর্মীবান্ধব। বিমানবন্দরে অভিবাসী কর্মীদের জন্য ভিআইপি লাউঞ্জ খোলা, বিমানবন্দরে তাদের হয়রানি বন্ধ করা, রেমিটেন্স বিপরীতে প্রণোদনা দেওয়া, ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ দেয়া ও পেনশন স্কিম চালু করার সহ অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহন করেছে। আমরা এই সব উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো কম সময়ে, কম খরচে অধিক সংখ্যায় কর্মী প্রেরণ করা এবং সাথে তাদের কন্যাশ নিশ্চিত করা। খরচ এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে সকল প্রকার প্রকাশ্য ও অপকাশ্য সিন্ডিকেট বিলুপ্ত করতে হবে ও কম সময়ে পাঠাতে হলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা দুর করতে হবে।

উপরে উল্লেখিত দাবি গুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নেওয়ার জন্য আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। সকল জনশক্তি রপ্তানিকারকদের পক্ষে সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com