কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা এবং চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা হয়েছে।

কক্সবাজার শহরের একটি পত্রিকা অফিস থেকে গভীর রাতে এক সাংবাদিককে অপহরণ, চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যাচেষ্টা, মারধর, লুটপাট ও চাঁদা দাবির পর সাজানো মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মনছুর আলম মুন্না ঢাকায় প্রকাশিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। তিনি সোমবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।

এ মামলায় চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া, এসআই ফরহাদ রাব্বি ইশান, এসআই সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজ ও চার কনস্টেবলকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার ফৌজদারি দরখাস্তে বাদী উল্লেখ করেছেন, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকেই ঘুস, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জনসাধারণকে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় ও হয়রানি করতেন। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে মনছুর আলম মুন্নাকে অপহরণের হুমকি দেন।

ভিকটিম মনছুর জানান, ২৫ জানুয়ারি গভীর রাতে ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার নির্দেশে চকরিয়া থেকে একদল পুলিশ কক্সবাজার শহরের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ কার্যালয়ে এসে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। অভিযানে অংশ নেয়- এসআই ফরহাদ রাব্বি ইশান, এসআই সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজ ও চারজন কনস্টেবল।

এ সময় পুলিশ পত্রিকা অফিস থেকে ২টি ল্যাপটপ, ৪টি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। একদিন আটক রাখার পর মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় ২১ দিন পর জামিনে মুক্তি পান মনছুর।

বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, এ সাজানো মামলায় ওসি নিজেই বাদী এবং নিজেই রেকর্ডকারী কর্মকর্তা, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নিজের এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে একজন সাংবাদিককে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি জানান, বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে।

বাঁধন/সিইচা/সাএ