টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নে এক চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। নিহতের বোনের দায়ের করা মামলায় জানা যায়, স্বামী সোহেল রানার দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলি আক্তারকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছেন অভিযুক্তরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের ফুলমালিরচালা গোয়ারিয়াপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত স্বামী প্রধান আসামি সোহেল রানা ওই এলাকার জামাল হোসেনের ছেলে। নিহত শিউলি আক্তার উপজেলার ছামনা গ্রামের মৃত আ. সালামের মেয়ে।
এ ঘটনায় নিহত শিউলি আক্তারের বোন মোছা. ছাবিনা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন । শিউলির পরিবারের অভিযোগ, তাদের না জানিয়েই মরদেহ তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়। এ নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধলে শিউলির বোন মোছা. ছাবিনা আক্তার বাদী হয়ে টাঙ্গাইলে জেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘাটাইল আমলী আদালতে পাঁচ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত শিউলি আক্তারের প্রথম বিয়ে হয় তার খালাতো ভাই মো. সুমনের সঙ্গে। পরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে তুলে এনে বিয়ে করেন ঘাটাইলের সোহেল রানা। পরে জমজ কন্যা সন্তানের জন্মও দেন শিউলি। প্রথম স্ত্রীসহ স্বামীর বাড়ির নানা অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেও সংসার চালাতে থাকেন। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের যোগসাজশে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী সখিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিউলির লাশ ফেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। প্রধান আসামি সোহেল রানার সঙ্গে আরও চারজন এই ঘটনায় জড়িত বলে উঠেছে অভিযোগ। তবে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন অভিযুক্তরা।
আরও জানা যায়, মামলার পর থেকে আসামিরা গাঁ ঢাকা দিয়ে রয়েছেন । শিউলির বোন মোছা. ছাবিনা আক্তারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কিন্তু তবুও আসামিরা প্রকাশ্যেই ঘুরাফেরা করছেন বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন শিউলির পরিবার।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের কাউকে পাওয়া যায় নি।
মামলার বাদী মোছা. ছাবিনা আক্তারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা গরিব বলে আজ বিচার পাচ্ছি না। আমার বোনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছেন তারা। এই হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করছেন তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. লুৎফর রহমান মুঠোফোনে জানান, আমার বোনকে মেরে ফেলেছে। প্রথমে আরেক জায়গায় বিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু সেখান থেকে প্রভাব খাঁটিয়ে অপহরণ করে তুলে নিয়ে বিয়ে করে সোহেল। এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আসামিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. রকিবুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি শুনেছি। তবে আদালতে মামলা হয়েছে কিনা জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর