কলারোয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক জামানউদ্দিন টুটুলকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী টুটুলের পিতা বিএনপি নেতা মো. শফিউদ্দিন মন্টু রোমেলর-রন্জু বাহিনীর দুই প্রধানসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে এ মামলা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আরেফিন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলা নম্বর ১৯। মামলায় উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালিদ মন্জুর রোমেল এবং উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আরিফুর রহমান রন্জু ও দেবু কে এজহারনামীয় আসামি করে আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এই বাহিনী কলারোয়ায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অপহরণ, লুটপাটসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছে। প্রভাবশালী এই বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছিল না।
থানা সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় মামলার পরপরই আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কলারোয়া থানা পুলিশ। কিন্তু, মামলার পরপরই আসামীরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
মামলার এজহার থেকে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দুপুরে জামানউদ্দিন টুটুলকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে রোমেল-রন্জুর নেতৃত্বাধীন বাহিনী। হত্যার উদ্দেশ্যে টুটুলের ওপর এই হামলা হয়। উপজেলার যুগিবাড়ি নদীর মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালিদ মঞ্জুর রোমেল এবং উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আরিফুর রহমান রন্জুর নেতৃত্বে এই হামলা হয়।
এই ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে টুটুলকে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়। মাথায় তিনটা সেলাই দিয়ে চিকিৎসকরা বিশ্রামের জন্য বাড়িতে পাঠান। পরবর্তীতে মাথা ঘুরি পড়ে গেলে পুনরায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, টুটুলের মাটির ব্যবসা আছে। নদী থেকে ইটভাটায় মাটি উত্তোলন করতে গেলে দেশীয় অস্ত্রসহ উপস্থিত হয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে রোমেল-রন্জু বাহিনী। টুটুল চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি করলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে টুটুলের মাথায় দা দিয়ে কোপ মারেন সাবেক উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি রোমেল। শাবল দিয়ে আঘাত করেন বর্তমান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রঞ্জু। তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন টুটুল। এ সময় রোমেল-রন্জুর সাথে উপস্থিত ছিলেন তাদের অন্যতম সহযোগী দেবু।
বিগত ৫ আগস্টে সরকারের পট পরিবর্তনের পর কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রোমেল-রন্জু। বিভিন্ন লোকজনের বাসাবাড়ি লুট, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে সবকিছুর সাথে জড়িয়ে পড়ে। রোমেল-রন্জু বাহিনীর অত্যাচারে কলারোয়ার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যায়। মাদক ব্যবসা থেকে মাদক গ্রহণ সবকিছুতেই তারা জড়িত হয়। রোমেল বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ভাগ্নে। আর রন্জু কলারোয়া প্রেসক্লাবের আহবায়ক ও কলারোয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তাওফিকুর রহমান সন্জুর আপর ভাই। যদিও বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব ভাগ্নের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিরক্ত এবং বিব্রত। পরে তিনিও কলারোয়া থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
কলারোয়া থানার ওসি শামসুল আরেফিন বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পিতা বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আগেও অসংখ্য অভিযোগ ছিল। সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারে করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর