প্রেম করে বিয়ে করা স্ত্রী ও সন্তান থাকার বিষয় গোপন রেখে প্রতারণার মাধ্যমে আরেক অনার্স পড়ুয়া তরুণীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা খেয়েছেন আনিসুর রহমান (৩৯) নামে এক আয়ারল্যান্ড প্রবাসী।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রতারক বর আনিসুর ও ঘটকসহ ১০ জনকে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। প্রতারক বর চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বেজপাড়া গ্রামের মসলেম উদ্দিনের ছেলে আনিসুর রহমান (৩৯)।
এসময় তার ভাই জাহিদুল ইসলাম, বিয়ের ঘটক মজনুর রহমান, ফরিদুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, মহেলা পশ্চিম পাড়া গ্রামের মজনুর রহমান, ছোট শালিখা গ্রামের মখলেছুর রহমান, বড়াইগ্রামের দিঘইর গ্রামের সুমন ও পারবোর্ণি গ্রামের সৈয়দ আলীকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী ও বড়াইগ্রাম থান সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার আয়ারল্যান্ড প্রবাসী আনিসুরের সাথে বড়াইগ্রামের পারবোর্ণি গ্রামের সৈয়দ আলীর অনার্স পড়ুয়া মেয়ের বিয়ের দিন ধার্য ছিল।
বিকেলে অর্ধ শতাধিক বরযাত্রীসহ বর আসেন কনের বাড়িতে। বিয়ে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া শেষে বর কাবিননামায় সই করার মুহূর্তে গহনা আর সই করা নিয়ে বাঁধে বিপত্তি। নিজেকে শিক্ষিত পরিচয় দিলেও বর ঠিকমতো সই করতে পারছিলেন না।
আর ৫ ভরি স্বর্ণের গহনা দেয়াড় কথা থাকলেও বরযাত্রীরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন মাত্র একটি নাকফুল। শিক্ষিত বরের সই করতে না পারা আর মাসিক ৪ লাখ টাকা বেতনে চাকরি করা বরের শুধু নাক ফুল নিয়ে বিয়ে করতে আসায় সন্দেহ হয় কনে পক্ষের। এসব বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে মারামারি বেধে যায়। এসময় স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রথম স্ত্রী ও একটি দুই বছর বয়সের মেয়ে থাকার কথা স্বীকার করেন বর আনিসুর রহমান। আনিসুর রহমানের প্রথম স্ত্রী মৌসুমী খাতুন মোবাইলে জানান, তিনি ও আনিসুর মামাতো-ফুফাতো ভাইবোন। ইতোপূর্বে তারও অন্যত্র বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু প্রেমের সম্পর্কের জেরে তিনি আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর আনিসুরকে পাবনা কোর্টে বিয়ে করেন। পরে তাকে আট মাসের
গর্ভবতী অবস্থায় রেখে ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর আনিসুর আয়ারল্যান্ড চলে যান। এরপর থেকে তিনি আর ঠিকমতো ভরণপোষণ দিতেন না। পরে স্বামীর বাড়ির সদস্যদের চাপে তিনি বাড়ি ছেড়ে গার্মেন্টসে চাকরি নেন। দুই সপ্তাহ আগে আনিসুর দেশে এলে তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে দুইদিন থেকে আবার কর্মস্থলে ফিরে যান। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করছে এমন কিছু তিনি জানতেন না বলে জানান।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ১০ জনকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর