কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে কোস্টগার্ডের মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে আবদুস শফি (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় জব্দ করা ট্রলার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ যুবদলের এক নেতাকে আটক করে কোস্ট গার্ড।
কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের দাবি, মাদক বহনকারী একটি ট্রলার থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে পানিতে ডুবে যান তিনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুস শফি শাহপরীর দ্বীপ ডাঙ্গরপাড়ার মৃত ছৈয়দ হোসেনের ছেলে। আটক হেলালউদ্দিন শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা। তিনি সাবরাং ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি এবং জব্দ করা ট্রলারটির মালিক।
কোস্টগার্ড জানায়, গোপন সূত্রে কোস্টগার্ডের কাছে খবর ছিল সকালে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপসংলগ্ন এলাকা দিয়ে ট্রলারে করে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান আসছে। খবরের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড অভিযান পরিচালনা করে। একপর্যায়ে কোস্টগার্ড সদস্যরা দেখতে পান শূন্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমার থেকে একটি ট্রলার বাংলাদেশে ঢুকছে। ট্রলারটিকে থামার জন্য সংকেত দেয়া হয়। তবে সংকেত অমান্য করে ট্রলারটি দ্রুত চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ সময় ট্রলারে থাকা এক ব্যক্তি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাকে নদী থেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া অভিযানে ধাওয়া দিয়ে ট্রলারটি জব্দ করা হয়। ট্রলারটিতে তল্লাশি চালানো হলে বিশেষ কৌশলে সেখানে লুকিয়ে রাখা ১ লাখ ৬০ হাজার ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। ট্রলার থেকে আটক করা হয় হেলাল উদ্দিনকে।
অভিযানে ইয়াবা উদ্ধার ও ট্রলার জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ডের শাহপরীর দ্বীপ স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ সাজ্জাদ। তিনি বলেন, অভিযানের সময় নদীতে ঝাঁপ দেন ট্রলারে থাকা এক ব্যক্তি। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় নদী থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসকের মাধ্যমে জেনেছেন ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নওশাদ আলম বলেন, কোস্টগার্ড সদস্যরা ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। হয়ত পানিতে ডুবে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম বলেন, নিহত আবদুস শফি স্থানীয় ডাঙ্গরপাড়ার মৃত ছৈয়দ হোসেনের ছেলে। তিনি মাছ ধরার নৌকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, কোস্টগার্ডের অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে নদীতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর