তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কলেজটির শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন আজ পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে অনড় থাকলেও ইতোমধ্যে শারীরিক অসুস্থতার কারণে কয়েকজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেয়া তার স্ট্যাটাসটি ছিল- "কদিন আগেই মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলো।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনেকেই দেশব্যাপী বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জ্বল করেছে। মেধাবীদের মধ্যে যারা ব্যর্থ হয়েছে, তারাও দেশব্যাপী বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিশ্চয়ই ভর্তির সুযোগ পাবে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত ও আপাতদৃষ্টিতে অ-মেধাবীদের কী হবে? তাদের অনেকেরই তো ডাক্তার হওয়ার শখ ছিল।
তারা কি ডাক্তার হতে পারবে না? তাদের জন্য এ বেলায় একটা পদ্ধতি বলে যাই। কোন একটা টেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে যান। এরপর সেই কলেজকে মেডিকেল কলেজ করার আন্দোলনে নেমে পড়েন। থ্যাঙ্ক মি ল্যাটার!"
এই স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে শিক্ষার্থীরা রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ মিছিল করে ইংরেজি বিভাগের সামনে অবস্থান গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা ইংরেজি বিভাগের কাছে দাবি জানান, বিকেল পাঁচটার মধ্যে দুঃখ প্রকাশ না করলে এবং সংশোধনমূলক পোস্ট না করলে ইংরেজি বিভাগের সেই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সালেকা মাহমুদ ঘটনার সময় বলেন, সেই শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি, তিনি খুব দ্রুতই একটি বার্তা প্রচার করবেন।
বিভাগীয় প্রধানের আশ্বাস নিয়ে শিক্ষার্থীরা আবারো মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে।
এরপরেই অধ্যাপক মামুন ফেসবুকে আরও একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি ফেইসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, "দেশব্যাপী চলমান বিভিন্ন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগের ঘটনায় মেডিকেল কলেজের ভর্তি নিয়ে আমি গতকাল একটি ফান পোস্ট দিয়েছিলাম। সেই পোস্টের কারণে "তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়" গঠনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। আমার পোস্টে তাদের নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। তিতুমীর কলেজের নামও সেখানে ছিল না।
সরকার যদি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে সেক্ষেত্রেও সরকারি কর্মচারী হিসেবে আমাদের সেটার বিরুদ্ধে যাবার কোন সুযোগও নেই। তারপরও তিতুমীর কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আমার পোস্টের কারণে কষ্ট পেয়েছেন। সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রাপ্য দাবির জন্য লড়ছি। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে অনেকেই রাস্তায় বসে আছি। অথচ তিতুমীর কলেজের হয়েও একজন শিক্ষক আমাদের নিয়ে এভাবে কটাক্ষ করছেন, এটা দুঃখজনক।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর