চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ জন আসামিকে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাংচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.আবু বকর সিদ্দিকের আদালত এই আদেশ দেন।আসামিরা হলো- প্রেমনন্দন দাশ (১৯), রনব দাশ (২৪), বিধান দাশ (২৯), বিকাশ দাশ (২৪), রুমিত দাশ, রাজ কাপুর (৫৫), সামির দাশ (২৫), শিব কুমার দাশ (২৩), ওম দাশ (২৬), অজয় দাশ (৩০) ও দেবী চরণ (৩৬)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তারা সবাই পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে হওয়া আরেকটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, এদিন নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল সকাল ওই ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাদেরকে এজলাসে নেওয়ার সময় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ করা গেছে। শুনানি শেষে একইভাবে তাদের আবার কারাগারে নেওয়া হয়।
এর আগে, গত ২৬ জানুয়ারি ওই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন রাত সোয়া ৯টায় তাদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সময়ে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। আইনজীবী সমিতি এ হামলার জন্য ইসকন সদস্য ও সমর্থকদের দায়ী করে আসছে।
এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। আইনজীবী খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর