
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জমির খাজনার আবেদনের অনুমোদন দিতে ৮-৯ হাজার টাকা দাবি করেন। এবং ২শ ৮০ টাকার খাজনার পরিবর্তে ১৫শ টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অনলাইনে আবেদন কৃত জমির খাজনার পরিমাণ হয় ৫০-৬০ হাজার টাকা, সেখানে ৮-৯ হাজার টাকা দিলে আমি আবেদনের অনুমোদন করে দিব বলে জানান ভূমি কর্মকর্তা। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে খাজনার রশিদ কেটে দেওয়ার কথা বলেন এই কর্মকর্তা অভিযোগ একাধিক ভুক্তভোগীর।
ভুক্তভোগী পাট্টা ইউনিয়নের পুঁইজোর গ্রামের বাসিন্দা সুমন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, বেশ কিছু দিন আগে আমার কয়েকটি খতিয়ানের মজির খাজনা পরিশোধ করার জন্য আমি অনলাইনে আবেদন করি। পরে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার কাছে আবেদনের অনুমোদন চাইলে গেলে কর্মকর্তা জানান ৮-৯ হাজার টাকা দিলে আপনার আবেদনের অনুমোদন করে দিব। আপনার খাজনার পরিমাণ হয় ৫০-৬০ হাজার টাকা। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আপনার আবেদনের অনুমোদন করে দিব। সুমন মিয়া আরো বলেন ভূমি কর্মকর্তার কথায় রাজি না হওয়ায় আমার কয়েকটি আবেদন বাতিল করে দেন।
ভুক্তভোগী সুমন মিয়া আরও বলেন, আমি বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানোর পর স্থানীয় বিভিন্ন নেতাকে দিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ইতিমধ্যে জাকির নামের একজন মেম্বার আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে এবং বলেছে তোর কোন খাজনার রশিদ কেটে দেওয়া হবে না তুই যাকে পারিস নিয়ে আয়।
আরেক ভুক্তভোগী পুঁইজোর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল আজিম বলেন, আমার একটি দাগে ২৩ শতাংশ জমির খাজনা পরিশোধ করতে পাট্টা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। ভূমি কর্মকর্তা আমাকে জানান আপনার বকেয়া রয়েছে সব মিলিয়ে খাজনার পরিমাণ ২৩শ ৫০ টাকা আপনি ১৫শ টাকা দেন। আমি তাকে ১৫শ টাকা দেওয়ার পর আমাকে ২শ ৮০ টাকার খাজনার রশিদ কেটে হাতে ধরিয়ে দেন।
আব্দুল আজীম আরো বলেন, আমি তাকে প্রশ্ন করি যে আপনি ১৫শ টাকা নিয়ে ২শ ৮০ টাকার রশিদ দিলেন কেন? তখন ভূমি কর্মকর্তা বলেন আপনার ২৩শ ৫০ টাকার খাজনা পরিবর্তে ১৫শ টাকা নিয়েছি আপনাকে ৮শ টাকা বাঁচিয়ে দিলাম। তখন ভুক্তভোগী প্রশ্ন করেন আপনি আমার ৮শ টাকা বাঁচিয়ে দিয়ে আপনার পকেটে ১২শ ৫০ টাকা কেন? এতে কর্মকর্তা জানান এতে আপনার সমস্যা কোথায়?
ঘটনার সত্যতা জানতে প্রতিবেদক পাট্টা ভূমি অফিসে গেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায় কর্মকর্তাকে কেউ একজন ফোন দিয়ে তার একটি জমির খাজনার রশিদ কেটে দেওয়ার কথা বলছে তখন কর্মকর্তা তাকে খরচা খরচের কথা উল্লেখ করছেন যা প্রতিবেদকের গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। আসলে এভাবে খরচা খরচ কি ?।
পাট্টা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শুধু আবেদনের অনুমোদন দিতে পারবেন। যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে খাজনা পরিষদ করা যায় সেখানে কর্মকর্তার টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নাই। যদি এমনটি ঘটে থাকে যে তিনি টাকা নিয়েছেন ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর