কৃষি নির্ভর চরফ্যাশন উপজেলাতে বিগত কয়েক বছর ধরে শসা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। যেমন ফলন হয়েছে আবার তেমনি ভালো দাম পেয়েছেন। চলতি মৌসুমে কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত দামের আশায় ব্যাপক হারে শসা চাষ করেছেন। তবে ফলন হয়েছে বেশ, কৃষকরা দামে বেজার। গত বছর এই সময়ে যেখানে শসার দাম ছিল প্রতি কেজি ২৫/৩০ টাকা করে অথচ এই সময়ে শসার দাম কেজি প্রতি ৮টাকা করে। এতে করে কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। মূলধন আসবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার চরফ্যাশন উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ হয়েছে। এই উপজেলার নীলকমল, নুরাবাদ, আহাম্মদপুর ও মুজিবনগর এলাকাতে শসার উৎপাদন হচ্ছে। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শসার দাম কিছুটা কমেছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাগ্য উন্নয়নের চেষ্টায় কৃষকরা জমিতে ফসল চাষ করে। কিন্তু বিভিন্ন রোগবালাই ও কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয় না। এর পরিবর্তে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশায় ভুগতে হয়। এরপরও এ উপজেলার কৃষকরা থেমে থাকেনি। তারা মৌসুম অনুযায়ী অন্য ফসল চাষের পাশাপাশি ব্যাপক হারে শসা চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। লাভের চেয়ে লোকসানের পাল্লা ভারী হলেও কৃষিতেই তাদের জীবন চলে। তাদের উৎপাদিত শসা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়।
উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নের শসাচাষী সামসুদ্দিন বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এ বছর ১ একর ৬০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। জমি লগ্নি, শসা চাষের জন্য জমি মেরামত, জনবল ও কীটনাশকসহ সর্বমোট খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা। এই সময়ে শসা বিক্রির কথা ছিল কেজি প্রতি সর্বনি¤œ ২০ টাকা দরে। তবে ৮ টাকা দরে শসা বিক্রি করছি। তাতে লোকসানের মধ্যে থাকতে হবে।
আহাম্মদপুর ইউনিয়নের কৃষক ইব্রাহিম বলেন, এবার ১ একর জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলন ভাল হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। ভাবলাম খরচ তুলে লাভ হবে। কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে হতাশ হচ্ছি।
কৃষক শামীম বলেন, গত বছরে শসার মণ ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এবার বাজারে শসা প্রতিমণ ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের দামের তুলনায় এবার পাইকাররা অনেক কম দামে শসা কিনছেন। এতে মোট খরচের অর্ধেক টাকা উঠবে কিনা সন্দেহ।
আড়ত মালীক হাজী বাবুল জানান, বিগত বছরে কৃষকদের কাছ থেকে শসা ক্রয় করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শসা সরবরাহ করে বেশ লাভজনক হয়েছেন। তবে এই বছরে শসার গাড়ী পাঠিয়ে চালান আনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রোকনুজ্জামান জানান, চলতি বছরে আশানুরূপ শসার ফলন ভালো হয়েছে। তবে খরচের তুলনায় দাম পাচ্ছে না কৃষকরা। এতে দাম কম হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে কৃষকদের।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর