• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৭ সেকেন্ড পূর্বে
মোঃ পারভেজ হোসেন বাঁধন
ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০১:৪৪ দুপুর
bd24live style=

ভোলায় ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলনে কৃষকের স্বপ্নবদল

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ভোলার চরাঞ্চলের মাটি উর্বর ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর জেলায় ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলন হয়েছে। তাই চরের বিস্তীর্ণ জনপদে এখন ফসলের ক্ষেতে শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ।

এ বছর শীত মৌসুমে ক্যাপসিকামের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা। ভোলার ক্যাপসিকাম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। ক্যাপসিকাম চাষ করে এখন ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন জেলার বেকার যুবকরা। অনাবাদী ও পতিত জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে দিন বদলের সংগ্রাম করছেন এসব যুবক। অন্য ফসলের চেয়ে কম সময় ও স্বল্প পরিশ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন ক্যাপসিকাম চাষের দিকে ঝুঁকছেন চরাঞ্চলের মানুষ।

স্থানীয় কৃষকরা মনে করেন, কৃষি বিভাগের সহায়তা ও উদ্যোগ থাকলে ভোলায় ক্যাপসিকাম চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

এক সময় উপকূলকে এক ফসলের জমির অঞ্চল বলা হলেও সেই অপবাদ অনেকটাই বদলে দিয়েছেন ভোলার কৃষকরা। তারা ধানী জমির পাশে কিছুটা উঁচু ও পতিত জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে সাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কেউ কেউ মাছের খামার ও অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্যাপসিকাম চাষ। এতে এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া আর রোগবালাই না হলে, খরচ পুষে দ্বিগুণ লাভবান হওয়ার কথাও জানান অনেকে। বর্তমানে ভোলা দ্বীপের কৃষকের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে ক্যাপসিকামের সমারোহ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা সদর উপজেলার মাঝের চর, রাজাপুর, বড়াইপুর, রামদাসপুর, চর চটকিমারা, চর হোসেন, দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চর, মাঝের চর, বোরহানউদ্দিনের চর লতিফ, গঙ্গাপুর চর, চর ব্যারেট, চর ছমিরউদ্দিন, লালমোহনের কচুয়াখালী চর, চর শাহজালাল, তজুমদ্দিন উপজেলার চর জহিরউদ্দিন, মনপুরার চর কলাতলি, ঢালচর, বদনার চর এবং চরফ্যাশনের কুকরি-মুকরি, ঢালচর, চর পাতিলাসহ বিভিন্ন চরে ধানের পাশাপাশি সবজি চাষ চলছে বছরের পর বছর ধরে।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ১০ বছর ধরে ফসলি জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করছেন। অন্যান্য বছরগুলোতে ব্যাপক ফলন না হলেও এবার ফসলটির বাম্পার ফলন হয়েছে।

এসব চরে এ বছর শত শত হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকামের চাষ হয়েছে। এখানকার ক্যাপসিকাম স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে নৌ-পথে চলে যায় ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি বাজারে। এছাড়া জেলা সদর ভোলার মাঝের চরের উৎপাদিত ক্যাপসিকাম দেশের বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। যা এখানকার চরাঞ্চলের কৃষি খাতকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলছে।

দৌলতখানের মদনপুর চরের কৃষক হেলালউদ্দিন জানান, বিগত বছরের মতো এ বছরও মদনপুরে ক্যাপসিকামের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। এখানকার শতাধিক চাষি ফসলটির আবাদ করছেন। তাদের সবার ক্ষেতেই এবছর ভালো ফলন হয়েছে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দস্তগীর সিকদার বলেন, চরের জমিতে এখন ক্যাপসিকামের সবুজ সমারোহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও প্রতিদিন এখানকার ক্যাপসিকাম ভোলা শহরসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।

“ভোলার চর” নামক এলাকার কৃষক আমানুল্লাহ মিয়া জানান, উর্বর মাটির কারণে তিনি প্রায় ২২ একর জমিতে এবার ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ১২ লাখ টাকা। সব খরচ পুষিয়ে এ পর্যন্ত তার লাভ হয়েছে ১৮ লাখ টাকা। এখনো প্রায় ৩০/৩৫ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।

তিনি বলেন, ক্যাপসিকাম চাষে শ্রম কম লাগে। এটির নানা জাতের বীজ পাওয়া যায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় শহর থেকে এ ফসলের বীজ সংগ্রহ করে সহজ প্রক্রিয়ায় এগুলো চাষ করা হয়। অন্যান্য বছরের চেয়ে অধিক ফলন হওয়ায় তিনি আনন্দিত।

ভোলা সদরের মেঘনা মধ্যবর্তী মাঝের চরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলন হয়েছে। ওই চরের কৃষক আলাউদ্দিন ও আবুল বাশার জানিয়েছেন, তাদের ১৬ একর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করতে খরচ হয়েছে ৭ লাখ টাকা। সব খরচ পুষিয়ে টার্গেটের চাইতেও বেশি লাভবান হয়েছেন। যার পরিমাণ কমপক্ষে ১২ লাখ টাকা। আরো যে পরিমাণ ক্যাপসিকাম রয়েছে তাতে ব্যাপক লাভবান হওয়ারও আশা করছেন তারা।

ক্যাপসিকাম চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরজুড়ে অন্যান্য ফসল চাষ করে যা আয় হয় তার চেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হয় মৌসুমের এক ফসল ক্যাপসিকাম দিয়ে। উচ্চ ফলনশীল ক্যাপসিকাম চাষে ব্যাপক লাভের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় জেলার কৃষকরা এখন ক্যাপসিকাম চাষের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন।

এদিকে ক্যাপসিকাম চাষে আশাবাদী হলেও এ চাষে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় কৃষি অফিসের সহায়তা চান চাষিরা। মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ ও সরকারি সহায়তার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে জেলা সদর কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ভোলার মাটি ও আবহাওয়া ক্যাপসিকাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ এলাকায় সারা বছরই ক্যাপসিকাম চাষ করা যায়। তবে শীত মৌসুম সর্বোত্তম সময়। দেশের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ক্যাপসিকাম চাষ গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এ ফসল চাষীদের সহায়তা করার কথাও বলেন এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, আবহাওয়া, প্রতিবেশ ও বৃষ্টির পরিমাণ সবকিছু অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দেওয়ার ফলে কৃষকরাও বেশ আগ্রহী চাষাবাদে। বর্তমানে সবজির বাজারে ক্যাপসিকামের দামও অনেক ভালো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হাসান ওয়ারিসুল কবির জানান, এ জেলায় মোট আবাদী জমির পরিমাণ ৪ লাখ ৫০ হাজার একর। এর মধ্যে জেলায় ২২০ একরের অধিক জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ হয়েছে। তাছাড়া এ বছর জেলায় ৯ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে অন্যান্য সবজির আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ২ হাজার হেক্টর সবজি আবাদ হয়েছে চরাঞ্চলে।

সূত্রমতে, এবার মৌসুমে একদিকে যেমন আবহাওয়া অনুকূল ছিল, অন্যদিকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম ছিল। তাছাড়া এ বছর শীতে কুয়াশার তেমন প্রভাব পড়েনি। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ক্যাপসিকামের দামও ভালো পাচ্ছেন তারা। বর্তমানে ভোলার জমিতে আবাদকৃত ক্যাপসিকাম কমমূল্যে কিনতে পেয়ে যেমন খুশি ক্রেতা, তেমনি ভালো দাম পেয়ে খুশি এখানকার কৃষক।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com