![BD24LIVE.COM](https://www.bd24live.com/bangla/public/logo-bd24live.png)
ভোলার মনপুরা দ্বীপ রক্ষা ও পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে চলা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের দৃশ্য-যাযাদি ভোলা জেলার অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দ্বীপ উপজেলা মনপুরা। নদী ভাঙনের কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে এ দ্বীপের আয়তন। কমে যাচ্ছে নানা জাতের ফসলের জমি ও উৎপাদন, গৃহহীন হয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ।
এ অবস্থায় মনপুরাকে রক্ষায় ১ হাজার ১৫ কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতোমধ্যে মনপুরাকে নদীভাঙন থেকে রক্ষায় প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে আশা জাগছে দ্বীপবাসীর মনে। নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মনপুরার মানুষ।
তথ্যমতে, আটশ' বছরের পুরোনো দ্বীপ মনপুরা। এক সময়ের সুন্দরবন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এ দ্বীপটি শুরু থেকেই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে সুপরিচিত ছিল। ছিলো উর্বর জমির শস্য ভাণ্ডার। যে কারণে চারদিক থেকে মানুষ এখানে এসে বসতি গড়ে তোলে।
শুরু থেকেই ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছাস এ অঞ্চলের মানুষদের নিত্যসঙ্গী। সত্তরের সাইক্লোন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ্তুমনপুরা্থ, হালের বাংলা চলচ্চিত্র 'মনপুরা' এবং দখিনা হাওয়া সী বীচ এ দ্বীপটিকে এনে দেয় দেশজোড়া পরিচিতি।
ফলে এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অসংখ্য পর্যটকরা প্রতিদিন ভিড় জমানো। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ; বিশেষ করে নদী ভাঙনের কারণে প্রতি বছরই দ্বীপটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারানোর পাশাপাশি রাস্তা-ঘাট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা।
খ্যাতনামা এ দ্বীপটিতে ভাঙনের প্রবণতা এতই বেশি যে, ভাঙতে ভাঙতে দ্বীপটির তিন ভাগের একভাগই নদীর গর্বে বিলীন হয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে পড়ছে মনপুরাবাসী।
এমন বাস্তবতায় দ্বীপটিকে রক্ষা এবং পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করায় আশাবাদী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হাজীরহাট এলাকার মৎস্যঘাটের মাছ ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন, মোস্তফা, কামাল, ইয়াসিন বলেন, বাঁধ নির্মাণ হলে মনপুরার মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে মনপুরাবাসী নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া এক সমীক্ষা অনুযায়ী ১৯৭৩ সালে মনপুরার আয়তন ছিল ১৫১ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে আছে ৯৯ বর্গকিলোমিটার। মনপুরা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত) শুভ দেবনাথ জানিয়েছেন, গৃহীত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দ্বীপ মনপুরার নদীভাঙ্গন বন্ধ হবে, দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে সাড়া জাগাবে এ জনপদ।
চলমান এ প্রকল্পেরর ব্যাপারে ভোলা পাউবো ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা জানান, নদী ভাঙন রোধ ও পর্যটনের অপার সম্ভাবনাকে সমৃদ্ধ করতেই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ চালানো হচ্ছে। প্রকল্পের ১৪টি প্যাকেজের সবগুলোর কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে। রক্ষা পাবে মাঠ-ঘাট, ফসলি জমি। প্রতিবোধ হবে নদীভাঙন। এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হয়ে মনপুরা দ্বীপ হবে পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর