নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছয় শিক্ষককে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক নোটিশের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।
নোবিপ্রবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদের সাথে অন্যায়ের দায়ে আইন বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক বাদশা মিয়া ও তৎকালীন শৃঙ্খলা কমিটির আরো ৫ শিক্ষককে (প্রফেসর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, প্রফেসর ড. মো. আনিসুজ্জামান, প্রফ প্রফেসর ড. বিপ্লব মল্লিক, নাজমুস সাকিব ও মো. আনোয়ার হোসেন)তিরস্কার ও ২ বছরের জন্য সকল ধরনের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, ফয়েজের বিরুদ্ধে মামলাকারী ফার্মেসি বিভাগের তৎকালীন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রীতম আহমদকে তিরস্কার করা হলো। ৫ আগস্ট ২০২৪ এ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফয়েজ আহমেদ সহ অন্যান্য ইস্যুতে যেসকল শিক্ষককে (প্রফেসর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, প্রফেসর ড. মো. আনিসুজ্জামান, প্রফ প্রফেসর ড. বিপ্লব মল্লিক, নাজমুস সাকিব ও মো. আনোয়ার হোসেন) অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে, তাদের এ নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ফয়েজ আহমেদের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে ৬৪ তম রিজেন্ট বোর্ডে ফয়েজের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ থেকে ফয়েজকে অব্যাহতি দিয়ে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সাথে তার ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। সে চাইলে আগামী ৬ বছরের মধ্যে তার ক্রেডিট সম্পূর্ণ করতে পারবে। আর্থিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে ফয়েজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫ লক্ষ টাকা দিবে।
এ বিষয়ে নোবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী বলেন, ফয়েজের সাথে হওয়া অন্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে। এ ক্ষেত্রে আইন বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান বাদশা মিয়াকে দুই বছরের বহিষ্কার দেওয়া হয়েছে। তিনি এই সময়ে কোনো প্রকার অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজে থাকতে পারবে না।
এছাড়াও তৎকালীন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের তিরস্কার করা হয়েছে এবং এক বছরের জন্য সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের ছবিতে একটি কমেন্ট করায় সাময়িক বহিষ্কার করে পাঁচদিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দীর্ঘ চার বছর ক্লাসে ফিরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদকে।
গত ১৪ অক্টোবর ২০২০ সালে মুহম্মদ মুমিন আদদ্বীন নামক একটি আইডি থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ভিপি নুরের ছবি এডিট করে পোস্ট করেন।
সেই পোস্টটি সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি শাহরিয়ার নাসের আবার পোস্ট করে। সেখানে ফয়েজ কমেন্ট করে বলেন এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না। এই একটি কমেন্টের কারণে তাকে জেল জুলুম খাটিয়েও বেআইনিভাবে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে অধ্যাপক ড. মো. হানিফ মুরাদকে আহ্বায়ক করে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর