![BD24LIVE.COM](https://www.bd24live.com/bangla/public/logo-bd24live.png)
ট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) প্যাসিফিক জিন্সের দুইটি পোশাক কারখানা বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিইপিজেডের ভেতরে কারখানার সামনে অন্তত চারশ শ্রমিক দুপক্ষে ভাগ হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেন। তাদের হাতে ছিল ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা। একপর্যায়ে তারা একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পুলিশ জানায়, প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলস লিমিটেড ও এনএইচটি ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুই কারখানায় প্যাসিফিক গ্রুপের আওতাধীন। এর মধ্যে প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলস লিমিটেড প্যাসিফিক নিট ডিভিশনের আওতাধীন। অন্যদিকে এনএইচটি ফ্যাশন লিমিটেড প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের আওতাধীন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, মালিকপক্ষ তাদের দাবি-দাওয়া বিবেচনা করুক। কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের আরেকটি অংশ বলছে, মালিকপক্ষ গতমাসে অনেক দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে। আপত্তি থাকলে গতমাসেই মীমাংসার প্রয়োজন ছিল। প্রতিমাসে আন্দোলন করলে মালিকপক্ষ তো ক্ষুব্ধ হবেই।
সূত্রে জানা যায়, প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর ইউনিট-১ ও ইউনিট-২ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলেও গ্রুপের অন্যান্য কারখানা চালু রেখেছেন। এতে বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয় এবং তারা অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদেরও কাজ বন্ধ করতে বলেন। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান,ফলে দু’পক্ষের একাধিকজন আহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের এএসপি জসিম উদ্দিন বলেন, “আজ (সোমবার) সকালে বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা এসে একই মালিকানাধীন অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের বের করার চেষ্টা করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
তিনি আরও বলেন, অন্য কারখানার শ্রমিকরা বলছেন, তাদের কারখানা তো বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি, তাহলে তারা কেন কাজ বন্ধ করবেন না? এ নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে এএসপি সাইদুর রহমান ঘটনাস্থলে রয়েছেন, এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, ‘আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। উনারা দুই-তিন দিন পর কারখানা চালু করবেন বলে জানিয়েছেন।’
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) খাদ্য ভাতা, চিকিৎসা ভাতাসহ বিভিন্ন বাড়তি সুবিধার দাবিতে বিক্ষোভ করেন প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলসের শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে সেখানে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তবে শ্রমিকেরা এ সময় তাঁদের ওপর চড়াও হন। এরপর রাতে কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রমিক কর্তৃক কারখানায় অবৈধভাবে কাজ বন্ধ রাখা এবং অন্যায় দাবিদাওয়া উত্থাপন করার কারণে ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ ধারা ১২(১) অনুযায়ী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর