![BD24LIVE.COM](https://www.bd24live.com/bangla/public/logo-bd24live.png)
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১৭৩ শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী আয়োজিত ‘দ্য হিরোস অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি’ অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। এতে শিক্ষার্থীকে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট ও উত্তরীয় দেওয়া হয়।
এতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলের নারী শিক্ষার্থীরা যখন জেগে উঠেছিল তখন খুনি হাসিনার ভিত নড়ে উঠেছিল। আমাদের হল ছাড়া করার পর আমাদের আশা প্রায় ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোন যখন রাস্তায় নেমেছিল তখন এই আন্দোলন জ্বলে উঠেছিল। এরপর মাদরাসা শিক্ষার্থী, সাধারণ ছাত্র-জনতার বিপুল অংশগ্রহণে আমরা আজকের এই দেশ পেয়েছি।
তিনি বলেন, বর্তমানের কোনো রাজনৈতিক দলের কেউ যদি সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকে তাহলে তাকেও ডেভিল হান্টের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এতদিন যে সিট সমস্যার কথা বলা হয়েছিল এটা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে জিইয়ে রাখা একটি সমস্যা। যখনই হলগুলো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে এলো তখনই এই সমস্যা কেটে গেল। ফ্যাসিজমের ছোট একটি ভার্সন হচ্ছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যদি আমরা স্টেট কল্পনা করি তাহলে এখানে প্রত্যেকটা মানুষ ব্যক্তি হিসেবে ফ্যাসিস্ট, প্রশাসনিকভাবে ফ্যাসিস্ট, শিক্ষকরা ফ্যাসিস্ট; সেখানে হলের মধ্যে ফ্যাসিজমের চর্চা হয়। আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে ফ্যাসিজমের ঊর্ধ্বে যেতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত গৌরবের যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই গৌরবের সাক্ষী হতে পেরেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, ঢাবি সবসময় পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেয়। এজন্য ফ্যাসিস্ট সরকার চেষ্টা করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দমিয়ে রাখতে। স্বৈরাচার জানে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে যায় তাহলে এই জাতি দাঁড়িয়ে যাবে। যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আত্মমর্যাদা নিয়ে থাকতে পারে তাহলে এই জাতির পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, তোমরাই বাংলাদেশ। মানুষকে সম্মান করতে পারার মধ্যে নিজেকে সম্মান করার সুযোগ আসে। তোমাদের কারণে আমরা একটি বিপুল সম্ভাবনার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। এখানে অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। তোমাদের প্রতি এই বিশ্ববিদ্যালয়, এই জাতি প্রকৃতপক্ষে ঋণী।
এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—
জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলাকারীদের অবিলম্বে প্রাতিষ্ঠানিক এবং রাষ্ট্রীয় বিচারের আওতায় আনতে আনা; জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অগ্রগামী ভূমিকা ও সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে ভিসি চত্বরকেন্দ্রিক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ; ১৫ জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রথম কার্জন হল এলাকায় শক্তিশালী প্রতিরোধকে চিত্রায়ণ করে, জুলাই প্রতিরোধ স্তম্ভ নির্মাণ; হলপাড়ায় শিক্ষার্থীদের জুলাই অভ্যুত্থানের অবদানকে চিত্রায়ণ করে ‘শিকল মুক্তির স্তম্ভ’ নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীদের বৈধ নেতৃত্ব বাছাই করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে অবিলম্বে ডাকসু কার্যকর করতে হবে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়াম হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর