
নামাজ এমন একটি ইবাদত যা বান্দাকে আল্লাহ তায়ালার কাছাকাছি নিয়ে যায়। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় নামাজের সময় বান্দা সব থেকে বেশি আল্লাহ তায়ালার কাছে থাকে।
কারণ, মানুষ যখন নামাজের তাকবিরে তাহরিমার সময় হাত তুলে তখন সে দুনিয়ার সব কিছু ভুলে গিয়ে নিজেকে আল্লাহর সামনে সপে দেয়। নামাজের প্রতিটি মুহূর্তে সে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আল্লাহর তাসবিহ তাহলীল করতে থাকে।
রুকু-সেজদা, বৈঠক— নামাজের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর প্রশংসা করা হয়। আল্লাহর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক পড়ে ওঠে নামাজের মাধ্যমে। নামাজের পরের মুহূর্তটিও একজন মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নামাজ পরবর্তী সময়ে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন।
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি জবাব দিলেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৯৮)।
নামাজের পর বিভিন্ন তাসবিহ-তাহলিল ও দোয়া করা হয়। রাসূল সা. নামাজের পর এই দোয়াটি পড়তেন—
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ، وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আংতাস্ সালামু ওয়া মিন্কাস্ সালাম, তাবারক্তা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনিই শান্তিদাতা এবং আপনার থেকেই কেবল শান্তি কামনা করি। হে আল্লাহ্! আপনি বরকতময়, মহিমাময় ও সম্মানিত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ শেষে তিনবার ইস্তেগফার করে এই দোয়া পাঠ করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১২২১)
এছাড়াও ফরজ নামাজের পর আরও বেশি কিছু আমল করা যেতে পারে—
>>রাসুল (সা.) প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে ৩ বার আসতাগফিরুল্লাহ্ বলতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১২২২)
>> সুবহানাল্লাহ [৩৩ বার], আলহাদুলিল্লাহ [৩৩ বার], আল্লাহু আকবার [৩৩ বার], [লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু; লাহুল মুলকু; ওয়ালাহুল হামদু; ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির) (১ বার)। এগুলো পাঠে গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১২৪০)
>> রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাঁধা থাকবে না।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৯৪৪৮; তাবারানি, হাদিস : ৭৮৩২)
>> ‘আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার’ ৭ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। সে দিন বা সে রাতে মারা গেলে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৮০)
>> সুরা ইখলাস, ফালাক্ব ও সুরা নাস, প্রত্যেকটি ৩ বার করে, ফজর ও মাগরিবের পর। রাসুল (সা.) বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমার আর কিছুরই দরকার হবে না।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর