
আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, অশ্বারোহী ও বিচারক ছিলেন হজরত আবু দারদা রা.। তার ডাক নাম আবু দারদা। মেয়ের নাম ছিল দারদা। সেই নাম অনুসারেই ইতিহাসে তিনি আবু দারদা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তার মূল নাম ছিল আমির। লোকে উয়াইমির বলতো।
মদিনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রের বালহারিস শাখার সন্তান। রাসূল সা.-এর সমবয়সী বা কিছুদিনের ছোট ছিলেন তিনি। বন্ধু আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা.-এর পরামর্শে ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাটি বেশ চমকপ্রদ—
আবু দারদা রা. একটি মূর্তিটির পূজা করতেন। প্রতিদিনের মতো একদিন সকালে উঠে মূর্তির কাছে গেলেন। তেল, সুগন্ধী মাখিয়ে মূর্তির গায়ে রেশমী কাপড় তুলে দিলেন। বেলা বাড়ার পর দোকানে চলে গেলেন।
তোমরা আলেম, তালিবে ইলম (ইসলামী জ্ঞান অর্জনকারী), তাঁদের প্রতি ভালোবাসা পোষণকারী অথবা তাঁদের অনুসারী— এই চারটির যেকোনো একটি হও। এর বাইরে পঞ্চম কিছু হয়ো না। তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে।
তার বন্ধু আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা তখন বদর যুদ্ধে গিয়েছিলেন। তিনি যুদ্ধ থেকে ফিরে আবু দারদার বাড়িতে গেলেন তার সঙ্গে দেখা করতে। তার স্ত্রী জানালেন তিনি বাড়িতে নেই। তিনি একটি হাতুড়ি নিয়ে প্রতিমাটি ভেঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন।
আবু দারদা বাড়িতে স্ত্রীর কাছে সব শুনে প্রথমে রেগে গিয়েছিলেন। তারপর গভীরভাবে চিন্তা করে বলে উঠলেন, যদি এই প্রতীমার মধ্যে সত্যি সত্যিই কোনো কল্যাণ থাকতো, তাহলে সে নিজেকে রক্ষা করতো। এমন চিন্তার পর তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা.-কে সঙ্গে নিয়ে রাসূল সা.-এর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।
এরপর থেকে তিনি তার পুরো জীবন ইসলামের পথে কাটিয়েছেন। হজরত আবু দারদা রা. সব সময় মানুষকে ইলম হাসিলের প্রতি উৎসাহ দিতেন। হজরত হাসান বলেছেন, আবু দারদা রা. বলতেন, তোমরা আলেম, তালিবে ইলম (ইসলামী জ্ঞান অর্জনকারী), তাঁদের প্রতি ভালোবাসা পোষণকারী অথবা তাঁদের অনুসারী— এই চারটির যেকোনো একটি হও। এর বাইরে পঞ্চম কিছু হয়ো না। তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। হাসানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, পঞ্চমটি কি? তিনি বললেন, বিদয়াত। (হায়াতুস সাহাবা. ২/১৬০)।
তিনি আরও বলতেন, জ্ঞানী ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রবেশ করা ও বের হওয়া একজন মানুষের বিজ্ঞতার পরিচায়ক। (আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ৩/১৬০)
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর