
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন তিনটি কমিটি ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বেশ কয়েকজন নেতা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে দাবি করে তারা এই কমিটিগুলোকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। এছাড়া কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়কও অবরোধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন করে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নতুন কমিটিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা জোবায়রুল আলম, নগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা চৌধুরী সিয়াম ইলাহি ও সংগঠক আবু বাছির নাঈম।
সংবাদ সম্মেলনের পর নগরের লালখান বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ শুরু করেন কিছু শিক্ষার্থী। সড়কের এক পাশ অবরোধ করা হলেও অন্য পাশ দিয়ে যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। তবে এর প্রভাবে লালখান বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় যানজট দেখা দিয়েছে। অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, কমিটি বাতিল না হলে তাঁরা সড়ক ছাড়বেন না।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে আগামী ৬ মাসের জন্য ৭৫৪ সদস্যবিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর থেকে ওই কমিটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির থেকে পদত্যাগ করা যুগ্মআহ্বায়ক চৌধুরী সিয়াম ইলাহি বলেন, যারা আন্দোলনে ভূমিকা রাখেনি এবং সম্মুখ সারিতে ছিলেন না তাদেরই কমিটির প্রধান পদে রাখা হয়েছে। অথচ যারা চট্টগ্রামে আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলেন তাদের মাইনাস করেই এ কমিটি দেওয়া হয়। আন্দোলনের সময় না থেকে যারা গত ৬ মাসে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে তাদেরই স্থান দিয়েছে কেন্দ্র।
সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক জুবায়ের মানিক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য রাসেল আহমেদ এই কমিটির বিষয়ে অবগত নয়। আরেক সমন্বয় খান তালাত রাফির ইন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল এই প্রহসনের কমিটি গঠন করে। আমরা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। এই কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত হাসনাত আবদুল্লাহ, আরিফ সোহেল ও খান তালাত মাহমুদ রাফিকে বীর চট্টলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
আরেক সমন্বয়ক আব্দুল বাছির নাঈম তিন দফা দাবি ঘোষণা করেন। এগুলো হলো- বিকাল ৩টার মধ্যে কমিটি বাতিল করে তিন দিনের আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে কমিটি গঠন করতে হবে, আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটি গঠনের পূর্বে অভিযুক্ত সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ও ব্যক্তির পছন্দে গঠিত এই কমিটিসমূহ গঠনের সঙ্গে জড়িত সকলের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টার দিকে ৬ মাসের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। এসব কমিটিতে মোট ৭৫৪ জনের নাম রয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর