
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জামায়াতে ইসলামী নোয়াখালী জেলা শাখার আয়োজনে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১১টার দিকে নোয়াখালী শহরে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে।বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্য জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে না দিলে আমরা প্রয়োজনে আবারো রাজপথে নেমে আসবো।তিনি আরও বলেন, বিশ্বের জনগণ এটা জানে আজ থেকে ১৩ বছর আগে স্বৈরাচারী হাসিনার অন্যায়, জুলুম, নির্যাতনের প্রতিবাদ করার কারণে এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে যেতে হয়েছে। একটি জালেম স্বৈরাচারী সরকারের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু আমরা আশা করি নাই। ৫ আগস্টের পরে এখন কি জালেমের কারাগার অব্যাহত থাকবে? স্বৈরাচারের কারাগার কী অব্যাহত থাকবে? মজলুম কি মুক্তি পাবে না? ছয় মাস চলে গেছে এখনো এটিএম আজহারুল ইসলামকে এই সরকার মুক্তি দেয়নি। কেন দেয়নি এটা আমাদের প্রশ্ন। কোন কারণে তার মুক্তি ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের যে বিচার হয়েছে আপনারা সেই বিচার সম্পর্কে জানেন। দেশের আইনে এবং আন্তর্জাতিক আইনে এই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনোভাবেই উত্তীর্ণ নয়। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের নামে কতগুলো সৎ, ধর্মভীরু, মানুষের কল্যাণে যারা আজীবন কাজ করে গেছে তাদেরকে গ্রেফতার করে অন্যায় ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। তারা ন্যায় বিচার পাইনি। এদেশের মানুষ সেটার সাক্ষী।
বাংলাদেশ গত ১৬ বছর একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারাগার উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার দৃষ্টিকোণ থেকে জঘন্য ছিল চার দেয়ারের ভেতরের কারাগার থেকে। চার দেয়ালের ভিতরের কারাগার যেটা সেটা সেখানে গ্রেফতারের ভয় ছিলনা। কিন্তু এ বাংলাদেশের সর্বত্র মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি গ্রেপ্তারের ভয়ে। তারা এদেশে ক্ষমতায় এসে শুধু দেশকে ধ্বংস করেনি প্রশাসনকেও দলীয়করণ করেছে, দেশের মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। সবচেয়ে বেশি জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে ইসলাম, মুসলিম জাতিসত্তা, আলেম-ওলামা, পীর মাসায়েখ,ইসলামী শিক্ষা দীক্ষার উপরে। যারা ন্যায়ের পক্ষে, ইসলামের পক্ষে, মানুষের অধিকার আদায়ের পক্ষে কথা বলেছে তাদের আওয়াজকে তারা স্তব্ধ করে দিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সাঈয়েদ আহমদের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশের সুরা সদস্য মাওলানা আলাউদ্দিন ও জেলা নায়েবে আমির মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক, নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মো: ইসমাইল হোসেন মানিক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নোয়াখালী জেলা সভাপতি এডভোকেট জহিরুল আলম এবং নোয়াখালীর শহর আমির মাওলানা মোঃ ইউসুফ।ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর কেএম নূরুল হুদার কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াতের দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরার পথে সংগঠনের তখনকার ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরে জামিনে বের হয়ে বাসায় অবস্থানকালে ২০১২ সালে ২২ আগস্ট তাকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর