
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা তো নিজ থেকে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি জানিয়েছিলাম। এই উদারতা আমরা দেখিয়েছিলাম। ভবিষ্যতেও এই উদারতা আমরা দেখিয়ে যাব। কিন্তু এটিএম আজহারুল ইসলাম কবে মুক্তি পাবেন, সেটি আমরা জানতে চাই সরকারের কাছে।
তিনি বলেন, আমরা তো চাইনি, কল্পনাও করিনি, এভাবে আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হবে আজহার ভাইয়ের মুক্তির দাবিতে। আমরা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, তার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সমাবেশ-বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে।
আমিরে জামায়াতের এমন ঘোষণায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আশা করব, সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবেন। রাজনীতির মজলুম নেতৃবৃন্দকে যেভাবে একে একে মুক্তি দিয়েছেন তেমনিভাবে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের জীবন থেকে এক এক করে ১৩টি বছর হারিয়ে গেছে। এই ১৩টি বছর কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে না। আর ১৩ মিনিটও তিনি জেলের ভেতর থাকুক আমরা তা আর চাই না।
হুঁশিয়ারি দিয়ে জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা ভদ্র, কিন্তু আমরা বোকা নই। আমাদের ভদ্রতাকে কেউ যেন দুর্বলতা মনে না করেন। ভদ্ররা যখন শক্ত হয় তখন কি পরিমাণ শক্ত হতে হয় তা গত সাড়ে ১৫টা বছর বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে। আমি অন্যদের কথা বলবো না কে কি করেছেন, কার সাথে আপস করেছেন, আমি বলতে চাই না। মহান আল্লাহর দেওয়া শক্তির কারণে গত সাড়ে ১৫টি বছর জামায়াতে ইসলামী কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেনি। জীবন দিয়েছে আপস করেনি। বহু আপসে প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছে৷ ফাঁসির কাষ্ঠে আমাদের নেতৃবৃন্দকে পাঠানোর আগে জনে জনে দফায় দফায় প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু আমাদের বীর নেতৃবৃন্দ সেই প্রস্তাবগুলোকে পায়ে ঠেলে ফেলে দিয়েছে, আমরা সেই বীরদের উত্তরসূরি সুতরাং আর ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। তাকে মুক্তি দিন।
দলীয় নিবন্ধনের ব্যাপারে সরকারকে হুঁশিয়ার দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, কেন আমাদের নিবন্ধন আটকে রেখেছেন? আমাদের নিবন্ধন তো জালিম সরকার কেড়ে নিয়েছিল। সেই জুলুম কি আপনারাও আমাদের উপরে করবেন? এজন্যই কি হাজার-হাজার ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে? হাজার-হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে? বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনো বৈষম্য বরদাস্ত করব না। সব বৈষম্যের কবর রচনা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর জীবন দিতে যেমন ভয় করেন নাই, গুলির সামনে বুক পেতে দিতেও ভয় করেন নাই, সর্বশেষ জুলাই আন্দোলনের শরিক হতেও ভয় করেন নাই, একটি মানবিক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ না গড়া পর্যন্ত আপনারা কি এ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন? তখন সর্বস্বরে উপস্থিত নেতাকর্মীরা ''হ্যা'' যুক্ত স্লোগান দেন।
তখন জামায়াত আমির স্লোগান ধরে বলেন, আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ আবু সাঈদ মুগ্ধ। এই যুদ্ধ চলবে ইনশাল্লাহ। মেহেরবানি করে আমাদেরকে আর কেউ চোখ রাঙ্গাবেন না। ফ্যাসিবাদের ভাষায় কেউ কথা বলবেন না। কথা বলবেন রাজনীতিবিদের ভাষায়। আমরা অভিনন্দন জানাব। কিন্তু মেহেরবানি করে চোখ রাঙাবেন না। এই সংগঠন কারো চোখ রাঙ্গানি পরোয়া করে না।
তিনি বলেন, অতীতেও দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল। ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্রের পরেও সেই ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। তবে সব ষড়যন্ত্র একে একে নস্যাৎ করে দিয়েছেন আল্লাহ। আমরা আশাবাদী আগামীতেও সব ষড়যন্ত্র আল্লাহ ব্যর্থ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ। আমরা সব ধরনের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর