
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ১১০৯টি মসজিদ ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। গাজা সরকারের অ্যান্ডওমেন্টস এবং ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় এক হাজার ২৪৪টি মসজিদের মধ্যে এক হাজার ১০৯টি মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মিডলইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজার ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত ওমরি মসজিদের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজার ৮৯ শতাংশ মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। ৮৩৪টি মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে এবং ২৭৫টি মসজিদ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
গাজার ধর্মীয় ও প্রশাসনিক কেন্দ্র, ওয়াকফ সম্পত্তি, কবরস্থান এবং মসজিদের ধ্বংসের ফলে মোট ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থের ক্ষতি হয়েছে। ইসরায়েলে সেনাবাহিনী মসজিদ ছাড়াও গাজায় ৩টি গির্জা ধ্বংস করেছে।
এছাড়াও ইসরায়েল বাহিনী গাজার কবরস্থানগুলোও লক্ষ্যবস্তু করেছে। ৬০টি কবরস্থানের মধ্যে ৪০টি কবরস্থান হামলার শিকার হয়েছে এবং ২১টি কবরস্থান পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। বলা হয়েছে, ৬৪৩টি ওয়াকফ অস্থাবর সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে এবং এই স্থানগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষা পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে।
মন্ত্রণালয়ের ৩১৫ জন ইমাম ও বক্তা ইসরায়েলের হামলায় শহিদ হয়েছেন এবং ২৭ জন মন্ত্রণালয়ের কর্মী আটক হয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি রয়েছেন। ধ্বংস হওয়া মসজিদ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্নির্মাণ করা হবে এবং মিনারেটস কোলিশন নামে একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ শুরু করা হয়েছে।
এই কোলিশনটির লক্ষ্য হলো- ধর্মীয় ও দানশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গাজার ওয়াকফ প্রকল্পগুলোকে সহায়তা প্রদান করা।
মিনারেটস কোলিশন মসজিদ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্নির্মাণের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে সাময়িক মসজিদ স্থাপন, ইমাম এবং ধর্মীয় কর্মকর্তাদের সহায়তা প্রদান, কুরআন পাঠের কোর্স শুরু করা এবং ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র চালু করার মতো প্রকল্পগুলোর পরিচয় দিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায়, সামাজিক সাহায্য প্রকল্প যেমন ফ্রি কবরস্থান প্রদান, পানি কূপ খনন, শহিদ ও বন্দি পরিবারের জন্য সহায়তা প্রদানও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গাজার অ্যান্ডওমেন্টস মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং ইসলামিক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং আবেদন করেছে যাতে ধ্বংস হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্নির্মাণে সহায়তা প্রদান করা হয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সমাজের সেবা পুনরায় শুরু করতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, মসজিদগুলো শুধুমাত্র উপাসনাস্থল নয় বরং সেগুলো সমাজের আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক কাঠামো শক্তিশালী করার কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর