
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তে কৃষকের ক্ষেতের সবজি গাছ কেটে ও রূপায়িত বোরো ধানের চারা তুলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
এ নিয়ে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উভয়পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুতই বৈঠকে বসে বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজিবি ৬০ব্যাটালিয়নের গঙ্গাসাগর ক্যাম্প কমান্ডার মূর্শেদুল হক। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এহেন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের সীমান্ত অধিবাসী ও কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা মালেক মিয়া (৮৭), সাফায়েত মিয়া (৩০) ও শামসুল আলম (৪০) বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তঘেষা আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের লক্ষীপুর সীমান্তের ২০২৪/১৩-এস পিলার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া সংলগ্ন বাংলাদেশ অংশে জমি লিজ নিয়ে এবং জমি বর্গা নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা যুগ যুগ ধরে চাষাবাদ করে আসছে।
সেখানে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি কৃষকরা সবজি চাষাবাদসহ বোরো ধান রোপণ করেছে। দুইদিন আগে বিএসএফ ভারতীয় লোকজন নিয়ে স্বদল বলে প্রবেশ করে রোপনকৃত ধানিজমি ও সবজি ক্ষেত কেটে ক্ষতিসাধন করে। এসময় ভারতীয় বিএসএফ লাউ, সিম, কপি, টমেটো গাছ কেটে ফেলে এবং ধানের চারা উপরিয়ে ফেলে। ওই জমি ভারতীয় অংশের বলে দাবি করে তারা।
খবর পেয়ে ৬০বিজিবি কর্নেল বাজার ক্যাম্পের টহল জওয়ানরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তীব্র বাধার মুখে একপর্যায়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় বিএসএফ। গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বি মালেক মিয়া বলেন, বিগত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে সীমান্তবর্তী জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন তিনি। সোমবার সকালে ওই জমিতে গেলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মনতলা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা বাধা হয়ে দাঁড়ান।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, বিএসএফ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে করে লাঠিসোঁটা নিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করে। তারা বাঁশ দিয়ে জমিতে সীমানা প্রাচীর দেয়ারও চেষ্টা চালায়। এসময় বাংলাদেশি কৃষকদের চাষ করা সবজি ক্ষেতে অনেক গাছ কেটে ফেলে তারা। বিষয়টি জানতে পেরে পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব দেয় বিজিবি।
গতকাল বুধবার সকালে মনিয়ন্দের লক্ষীপুর সীমান্ত পিলার এলাকায় বৈঠকের পর গঙ্গাসাগর বিজিবি সুবেদার মূর্শেদুল হক জানান, আপত্তিকৃত অংশ ব্যতীত অন্য জায়গায় চাষাবাদ অব্যাহত থাকবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আপত্তিকৃত জায়গায় উভয় দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক যৌথ মাপ জরিপের পর বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে বলে একমত পোষণ করা হয়েছে বৈঠকে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর