অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড.মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশ পরিচালনায় তরুণ সমাজকে সজাগ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর তীরে বাংলাদেশ স্কাউটস আয়োজিত সপ্তম জাতীয় কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট ক্যাম্প (কমডেকা) উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম এ দেশের প্রাণশক্তি। স্কাউট আন্দোলন দেশের তরুণদের সমাজ ঘনিষ্ঠ কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করছে এবং দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে তুলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

তিনি বলেন, ১৯৯৪ সাল থেকে বাংলাদেশ স্কাউটে মেয়েদের অন্তভর্’ক্তি অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে স্কাউটিংয়ে মেয়েদের অংশগ্রহণ ১৩ পার্সেন্টের কম। এই সংখ্যাকে আরো বাড়াতে হবে। আমি আশা করি স্কাউটিংয়ে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হবে।

নিজের স্কাউটিংয়ের স্মৃতি চারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি নিজে একজন স্কাউট ছিলাম।  আমারও ছোটবেলা কেটেছে তোমাদের মতো স্কাউট করে। তোমাদের মতো স্কাউট পোশাক পড়ে ও স্কার্ফ ঝুলিয়ে আমার শৈশব কেটেছে। তোমাদের দেখে আমার সেসব কথা মনে পড়ে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের কমডেকার থিম নির্ধারণ করা হয়েছে বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে স্কাউটিং। দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুযোগ করে দিয়েছে। এখন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপযোগী করে তুলতে হবে এদেশকে।

আর যেন দেশের মাটিতে স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এসময় বাংলাদেশ স্কাউটস আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যথেষ্ট শক্তিশালী, আমাদের এ অবস্থানকে আরো সুদৃঢ় করতে হবে।

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এ ক্যাম্পটির মাধ্যমে একটি বিশেষ এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলি  বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ।

এ কর্মসূচিগুলো জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নতি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে হতে পারে এবং এর মাধ্যমে স্কাউটরা ক্যাম্প চলাকালীন সময়ে এলাকার লোকজনের স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে পারে, গবাদি পশু হাস-মুরগির চিকিৎসা দিতে পারে। শাক-সবজি-ফলমুলের বাগান করতে পারে, শৌচাগার তৈরি করে দিতে পারে বা এই ধরনের আরো অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে।

বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে স্কাউটিং শ্লোগানে সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ে ১৯ থেকে ২৫ পর্যন্ত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কমডেকায় উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সপ্তম জাতীয় কমডেকা সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্যসচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্কাউটস এডহক কমিটির সদস্য সচিব এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী  মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, বাংলাদেশ স্কাউটস এডহক কমিটির সদস্য ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম এবং ফরিদা ইয়াসমিন। 

এসময় সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার ফারুক হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ও সারাদেশ থেকে আগত স্কাউট সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মুনতাসির/সাএ