• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২১ সেকেন্ড পূর্বে
মো. আবদুর রউফ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৪০ দুপুর
bd24live style=

সাজেককে কেন্দ্র করে বেড়েছে আর্থসামাজিক উন্নয়ন; বদলে গেছে জীবনধারা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

সাজেক দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি। আর এ সাজেক এখন শুধু একটি পর্যটন কেন্দ্রই নয়। সাজেক স্থানীয় হাজারো বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টির নাম। সাজেককে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে এখন বেড়েছে আর্থসামাজিক উন্নয়ন। বেসরকারিভাবে সাজেকে গড়ে উঠেছে ২০৫টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ১২০টি রিসোর্ট, ২১টি রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য দোকানপাট রয়েছে ৬৪টি। এসব প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার, বয়, ক্লিনার, বাবুর্চি পদে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় দের হাজার মানুষের। যার সিংহভাগই রয়েছে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর লোকজন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ফলে পর্যটকদের খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক নিয়ে আসতে যানবাহন ব্যবসাও গড়ে উঠেছে। এর জন্য প্রায় ৬ শতাধিক গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ির মধ্যে জিপ গাড়ি (চান্দের গাড়ি), পিকআপ, সিএনজি ও মাহিন্দ্রাও রয়েছে। রয়েছে মোটরসাইকেলও। যেগুলো প্রতিদিন পর্যটকদের খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক ভ্যালিতে আনা-নেওয়ার জন্য কাজ করেন। এতে গাড়ির মালিক, চালক এবং হেল্পার সহ কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় আরও ২ হাজার মানুষের। অথচ একসময় জুম চাষ ছাড়া জীবিকা নির্বাহের তেমন আর কোন কর্ম ছিল না সাজেক ও আশপাশে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর।

এদিকে দেশের প্রথম দিকের সবচেয়ে উঁচু সড়ক এ সাজেক সড়ক। এক সময়ের মাটি আর ইটের সলিংয়ের রাস্তা কেটে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তৈরি করেছেন পিচের সর্পিল রাস্তা। যা যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঈর্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছে। এ সাজেক ঘেঁষেই সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মাণ করা হচ্ছে সীমান্ত সড়ক। যা পরিচালনা করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ইসিবি'র ৩৪ কন্সট্রাকশন ব্রিগেড।

সরেজমিনে সাজেক ঘুরে দেখা গেছে, একসময় যে কলা ক্রেতার অভাবে পঁচে যেতো সেই কলা এখন স্থানীয়রা পর্যটকদের কাছে বিক্রি করছেন প্রতি পিচ আকারভেদে ৫-১০ টাকা করে। এক সময় যে আনারস ৫-৭ টাকায় বিক্রি করতেন তারা সেটি এখন বিক্রি করতে পারছেন ৫০ টাকায়। এছাড়াও সন্ধ্যার পর রাস্তার পাশে বিভিন্ন স্পটে অনেক ভাসমান খাবার দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেন পাহাড়ি নারী-পুরুষ। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে ব্যাম্বু চিকেন, ব্যাম্বু ফ্রাই, ব্যাম্বু টি (চা), সামুদ্রিক মাছ ভাজা, নানা ধরনের ফলমূলসহ নানান মুখরোচক খাবার।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। মাঝে বাঘাইহাটে যাত্রা বিরতি দিতে হয়। পর্যটক থামাকে উপলক্ষ্য করে রাস্তার পাশে ছোট বাজার ও দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকান পাহাড়ি নারীরা পরিচালনা করেন। এর পুরো রাস্তাজুড়ে ঝুড়িতে করে নানা ফলমূল বিক্রি করে পাহাড়ি ছেলেমেয়েরা। রাস্তার পাশে গাড়ি থামতেই পর্যটকদের কাছে ফলের ঝুড়ি নিয়ে ছুটে যান তারা। পর্যটকদের কাছে এসব পণ্য বেশ ভালো দামে বিক্রি করছেন পাহাড়ি ছেলেমেয়েরা।

সিজুকছড়ার কার্বারী ও স্থানীয় দোকানি ধনঞ্জয় চাকমা বলেন, 'সিজকছড়ায় আগে ২-১টি দোকান ছিল। বর্তমানে এখানে ১৫-১৮টি দোকান রয়েছে। এসব দোকান পাট পর্যটকদের জন্যই করা হয়েছে। এখানে পর্যটকরা থামায় আমাদের অনেক বেচাকেনা হয়। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোভাবে বসবাস করতে পারছি। সাজেক প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এ এলাকা বদলে গেছে। কিন্তু আমরা পানির কষ্টে আছি। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা দরকার।'

সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি চাইথোয়াইঅং চৌধুরী (জয়) বলেন, 'সাজেকে ২০৫টি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে ১২০টি রিসোর্ট, ২১টি রেস্টুরেন্ট এবং ৬৪টি দোকানপাট রয়েছে। এর বেশিরভাগই স্থানীয়দের মালিকানাধীন। তবে যারা একা পারছেনা তারা অংশীদারির ভিত্তিতে চুক্তির মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে। আবার অনেকে বার্ষিক চুক্তি করে জায়গা ভাড়া দিয়েও ব্যবসা করছে। যার ফলে সাজেকে কেউ বেকার নেই।'

এত উন্নয়নের মাঝেও সাজেকে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। অপূরণ রয়েছে হাসপাতাল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। সাজেকে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও তাতে নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় বেগ পেতে হয় স্থানীয়দের। সেখানে বিজিবি নিয়ন্ত্রিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোন উচ্চ বিদ্যালয়। সাজেকের সবচেয়ে বড় সমস্যা পানি। রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্টগুলোতে ব্যবহারের জন্য পানি নিয়ে আসতে হয় সিজকছড়ার ছড়া থেকে। ১টি চান্দের গাড়িতে করে ১ হাজার লিটার পানি নেওয়া হয়। আর এই পানি পেতে ব্যয় হয় আরও ১ হাজার টাকা।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি অনিত্য ত্রিপুরা বলেন, 'আজকের আধুনিক সাজেক আমাদের জন্য আশীর্বাদ। একসময় আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য উঁচুনীচু পাহাড় বেয়ে বাঘাইহাট বাজারে যেতে হতো। যাওয়া-আসায় আমাদের ৩-৪ দিন সময় লাগতো। সাজেকের জন্য এখানে পাকা সড়ক হয়েছে, বিদ্যুৎ এসেছে আমরা সবকিছুই এখন সাজেক পাচ্ছি। কিন্তু এখানে পানির বড় অভাব রয়েছে। আশাকরি সরকার পানির ব্যবস্থা করবে।'

সাজেক রুইলুই মৌজার হেডম্যান লালথোংয়া লুসাই বলেন, 'আগের সাজেক আর বর্তমানের সাজেকের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। বর্তমান সাজেকে কোন কিছুর অভাব নেই। অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে এখানে বিশুদ্ধ পানি, একটি উচ্চ বিদ্যালয় আর একটি হাসপাতালের সংকট রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এগুলোর ব্যবস্থা হলেই এই এলাকার মানুষ আরও সুন্দর জীবনযাপন করতে পারবে'।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার বলেন, ' শীঘ্রই সাজেকে একটি ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। পুরো সাজেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য একটি স্কিম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সে সাথে সাজেক আমরা একটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ছাত্রদের পড়ালেখার সুবিধার্থে একটি হোস্টেল করার উদ্যোগ নিয়েছি। আশাকরি, সাজেকে আর কোন সমস্যা থাকবেনা।'

 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com