
ঘরের মাঠে টুর্নামেন্ট, অথচ ক্রিকেট বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করা ভারতের জেদের কাছে একপ্রকার নত হতে হয়েছে পাকিস্তানকে! সে জন্য আয়োজক হয়েও নিজেদের মাঠে রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না মোহাম্মদ রিজওয়ানদের।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-ভারত। এ জন্য নিজ দেশের সমর্থক আর সাবেক ক্রিকেটারদের কাছে সমালোচিত হতে হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে। তবে এসব সমালোচনা কানে তোলার সময় কোথায় বাবর আজমদের! জয়ের দিকে সব দৃষ্টি দলটির খেলোয়াড়দের।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ে টিকে থাকতে ২ পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কাছে। ভারতকে হারিয়ে ২০১৭ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। এরপর বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ মিলিয়ে রোহিতদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে কোনো জয় পাননি রিজওয়ানরা, ছয় ম্যাচের পাঁচটি হার, অন্যটি পরিত্যক্ত হয়েছে। যদিও সার্বিক পরিসংখ্যানে এগিয়ে পাকিস্তানই, ১৩৫ বার লড়াইয়ে ৭৩টি জয় দলটির, ভারত জিতেছে ৫৭টি ওয়ানডে।
তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে ভারত। উল্টো অবস্থান পাকিস্তানের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু করেছে দলটি। তবে অতীত নিয়ে পড়ে থাকতে চান না বলে জানান পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ।
তিনি বলছিলেন, ‘যা হয়ে গেছে, তা এখন অতীত। আমরা সবটুকু মনোযোগ দিচ্ছি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। আগের ম্যাচের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেব আমরা এবং চেষ্টা করব সেগুলোর পুনরাবৃত্তি না করতে। আমাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ এক লড়াই, অনেকটা বাঁচা-মরার ম্যাচ। সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ বাঁচিয়ে রাখতে জেতাটা জরুরি।
দুই দলের ধ্রুপদি লড়াইয়ের আগে অবশ্য কৌশলী পথে হাঁটলেন ভারতের ওপেনার শুভমান গিল, ‘ভারত-পাকিস্তান মানেই বড় ম্যাচ। ফাইনাল হলে তো আরো বড়। আমরা ভালো খেলছি। তার মানে পাকিস্তানকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যে দল বেশি চাপ সামলাতে পারবে, তারাই জিতবে। ওয়ানডে এমন একটি সংস্করণ, যেখানে খেলতে নামলে মনে হয় হাতে খুব বেশি সময় নেই। আউট হলে মনে হয়, হাতে কত সময় ছিল। তাই স্কোরবোর্ডের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে।’
ম্যাচের ভেন্যু দুবাইয়ের কন্ডিশনে স্পিনাররা বাড়তি সাহায্য পেয়ে থাকেন। কিন্তু এই বিভাগে ঘাটতি রয়েছে পাকিস্তানের। স্কোয়াডে থাকা একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার আবরার আহমেদ। কিউইদের বিপক্ষে হাত ঘোরানো অনিয়মিত দুই স্পিনার খুশদিল শাহ ও সালমান আগা ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে কতটা কার্যকর হতে পারেন, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। এদিকে ভারত পাঁচজন স্পিনার নিয়ে এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এসেছে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনজনকে খেলিয়েছে তারা। এসব হিসাব করে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের কোনো সুযোগই দেখছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকর, ‘ভারতের মানের ধারেকাছেও নেই পাকিস্তান। সম্প্রতি তাদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য করছে ভারত।
এবার পাকিস্তানকে আরো দুর্বল দেখাচ্ছে। তবে এর পরও এই লড়াই নিয়ে উন্মাদনায় ভাটা পড়েনি।’ পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক অবশ্য উত্তরসূরিদের হয়ে ব্যাট করেছেন, ‘ভারতের বিপক্ষে জেতার সামর্থ্য আমাদের দলের আছে।
কিন্তু দায়িত্বটা খেলোয়াড়দের নিতে হবে, বিশেষ করে সিনিয়রদের। ভেবে দেখো, ভারতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচটা যদি কেউ জেতায়, তাহলে রাতারাতি মহাতারকা হয়ে যাবে। তাই চাপ থাকলেও এটাকে সুযোগ হিসেবে নাও।’
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ:
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কেএল রাহুল (উইকেটকিপার), হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল, রবীন্দ্র জাদেজা, হর্ষিত রানা, মহম্মদ সামি, কুলদীপ যাদব।
পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ:
ইমাম-উল-হক, বাবর আজম, কামরান গুলাম, মহম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক এবং উইকেটকিপার), সলমন আলি আগা, সাউদ শাকিল, খুশদিল শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হ্যারিস রউফ, আব্রার আহমেদ।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
স্পোর্টস এর সর্বশেষ খবর