
একটি ব্রিজের কারণে ১৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের ভাগ্য থমকে আছে। ভরসা তাদের বাঁশের সাঁকো। উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবী করলেও কেউ শুনে নাই গ্রামবাসীর কথা। পরে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে এলাকায় চাঁদা তুলে জিনজিরাম নদীর উপর একটা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো তৈরী করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের চরলাঠিয়াল ডাংঙ্গা গ্রামে জিনজিরাম নদীর উপর স্থানীয়দের চাঁদার টাকায় তৈরী করা হয় বাঁশের সাঁকো। প্রতিনিয়ত পারাপার হয় বিকরিবিল, লালকুড়া, বকবান্দা নামাপাড়া, বকবান্দা, পাহাড়তলী, খেওয়ারচর, উত্তর আলগার চর, দক্ষিণ আলগার চর, বংশির ভিটা, লাঠিয়ালডাঙ্গা, বালিয়ামারীসহ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের মতো।
এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলকারী মিরাজুল হক,মনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়ে গেছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছি। নদীতে বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় কৃষকের উৎপাদিত ফসল বিভিন্ন হাটে বাজারে নিতে অতিরিক্ত খরচ ব্যয় করতে হচ্ছে তাদের। সেই সাথে সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিবি’র টহল দিতেও সমস্যা হয়।
লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিম উদ্দিন (৯০) বলেন, কি বলবো আর দুঃখের কথা দেশ স্বাধীনতার ৫৪ বছর অতিক্রম হলেও আমরা এই বয়সে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছি। এই নদের উপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করে দিলে এই অঞ্চলের মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে পাবে।
পাহারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোত্তালেব বলেন, এ জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক কর্মচারী, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী মানুষ যাতায়াত করে। শিক্ষার্থীসহ আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হই। সরকারের কাছে এ জিনজিরাম নদীতে একটি ব্রিজের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সরবেশ আলী বলেন, চর লাঠিয়ালডাংঙ্গা নদীর উপর একটি ব্রিজের জন্য নির্বাচনের সময় স্থানীয় লোকজনদেরকে আশ্বাস দিয়েছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি উপজেলায় একাধিকবার বলেছি এবং আবেদন দিয়েছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মুনছুরুল হক বলেন, এই স্থানে একটি ব্রিজের জন্য মাপ জরিপ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বরাদ্দ আসলেই কাজ হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। আবেদনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর