
‘ইউগ্লেনা পাউডারের পুষ্টিগুণ ও ব্যবহৃত রান্নার তেল (UCO) সম্পর্কে সচেতনতা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডে টেলিকম ভবনের ইউনূস সেন্টারে ইউগ্লেনা জিজি লিমিটেড (গ্রামীণ ইউগ্লেনা) এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে পুষ্টি, টেকসই উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা খাতের বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ইউগ্লেনা পাউডারের পুষ্টিগুণ ও খাদ্যপণ্যে এর ব্যবহার এবং বাংলাদেশে ব্যবহৃত রান্নার তেল (UCO) পুনরায় ব্যবহারের সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
ইউগ্লেনা জিজি লিমিটেড (গ্রামীণ ইউগ্লেনা) হলো জাপানের ইউগ্লেনা কোং লিমিটেড এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানি। এটি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মি. মিৎসু ইজুমো এর উদ্যোগে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
গ্রামীণ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন সুলতানা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি উষ্ণ শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রধান অংশগ্রহণকারীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতির মাধ্যমে শুরু হয়। এতে নাবিস্কো, নিউ অলিম্পিয়া, বায়োটেক, মুইনজার এবং খাসফুড এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও গ্রামীণ ডানোন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপেশ নাগ উপস্থিত ছিলেন।
গোলটেবিলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল মিস আয়াকা নাকাশিমা-প্রধান, লাইফ সায়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট, জাপান-এর উপস্থাপনা। তিনি ইউগ্লেনা পাউডারের ৫৯টি অপরিহার্য পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোকপাত করেন, যা এটিকে অত্যন্ত শক্তিশালী পুষ্টিকর খাদ্য এর পরিপূরক হিসেবে ব্যবহ্নত হচ্ছে। এছাড়া, ইউগ্লেনা পাউডারের খাদ্য ও প্রসাধনী শিল্পে ব্যবহারের উদ্ভাবনী বিষয়টি নিয়েও আলোকপাত করা হয়।
বাংলাদেশে ইউগ্লেনা পাউডার ব্যবহার করে গেন্কি (শক্তি) কর্মসূচির অধীনে বাচ্চাদের জন্য পুষ্টিকর বিস্কুট তৈরি ও বিতরণ করা হয়, যা অপুষ্টির ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এরপর, আলোচনা করা হয় বাংলাদেশে ব্যবহৃত রান্নার তেলের (UCO) ব্যবহার ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে। বাংলাদেশে রান্নার তেল একাধিকবার ব্যবহারের প্রচলিত প্রবণতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা মন্তব্য করেন, রান্নার তেল একাধিকবার ব্যবহারের এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হতে পারে।
UCO থেকে বায়োফুয়েল রূপান্তরের সম্ভাবনা
গ্রামীণ ইউগ্লেণা এর বোর্ড মেম্বার মিস ইকুহো মিয়াজাওয়া এবং অপারেশন প্রধান মি. নাজমুচ্ ছায়েদাত UCO নিয়ে পরিচালিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করেন। এতে দেখা যাচ্ছে যে, UCO থেকে বায়োফুয়েল তৈরি করা সম্ভব, যা পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এবং টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে ব্যাপক সহায়ক হবে।
আলোচনার পর উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা নেটওয়ার্কিং সেশন উপভোগ করেন, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময় করেন।
ফোকাস গ্রুপ আলোচনা (FGD)
গোলটেবিল আলোচনায় দু’টি বিষয়ে ফোকাস গ্রুপ আলোচনা (FGD) অনুষ্ঠিত হয়:
১. ইউগ্লেনা পাউডার খাদ্যপণ্যে ব্যবহার ও এর গুরুত্ব।
২. UCO-এর বিকল্প ব্যবহার ও সম্ভাব্য সমাধান।
গ্রামীণ ইউগ্লেনার গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান জনাব মোঃ মোকসেমুল ফাহিম UCOব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মূল্যবান ও বিশ্লেষনাত্নক বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং UCO বায়োফুয়েল-এ রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে টঈঙ-এর বিকল্প ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাই করা অতীব জরুরী।
অনুষ্ঠানটি পুষ্টিহীনতা ও খাদ্য নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়। ইউগ্লেনা কোং লিমিটেডের বাংলাদেশ অফিসের প্রধান মিস শিওরি ওনিশি বলেন, ‘আমরা উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে এসব বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবেলায় অঙ্গীকারবদ্ধ। একসাথে কাজ করলে টেকসই পরিবর্তন সম্ভব।’ বিজ্ঞপ্তি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর