
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর সমগ্র জাতি আজ স্বপ্ন দেখছে শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার,যে দায়িত্ব শিক্ষার্থীদেরকেই নিতে হবে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আশুলিয়ায় নলাম এলাকার গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত চতুর্থ সমাবর্তনে যোগ দিয়ে বক্তব্যকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসময় উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জালিয়াতি ও প্রতারণার নির্বাচন, বিরোধী মত দমন, সীমাহীন দুর্নীতি, রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে ধ্বংস, মাত্রাতিরিক্ত পুলিশ ও আমলা নির্ভরতার কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবেই একটা নাজুক অবস্থা অতিক্রম করছে। রাজনৈতিক দলাদলি, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির অপসংস্কৃতি ও অপতৎপরতা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নির্বাচিত ছাত্র সংসদ দ্বারা ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশের উদ্যোগ নেয়া জরুরি। অনিয়মিত হলেও গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশের সেই সুযোগ দিয়েছে, যা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য করেছে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন দূরদর্শী এবং স্বপ্নদ্রষ্টা। যেখানেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্পর্শ পেয়েছে সেখানেই নতুনের জন্ম হয়েছে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্তরা দেশ সমাজ ও রাষ্ট্রের সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে, সমাবর্তন বক্তা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমরা কোথায় আছি। আমরা ভালো মানুষ হতে পারিনি। ভালো মানুষ তৈরি করার জন্যই আমাদের এই গণ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭২ সালে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে এদেশে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নের জন্য একটি বীজ বপন করেছিলেন। সেই বীজ থেকে শাখা-প্রশাখাসহ বিরাট এক বৃক্ষে পরিণত হয়েছে- গণ বিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রকাশনী, মুদ্রণ, নগরকেন্দ্র ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ।
অন্যদিকে, গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন বলেন, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শেষ হলেও, এই শেষ থেকেই আপনাদের নতুন জীবন শুরু হবে। শিক্ষা জীবনে অর্জিত জ্ঞান এখন বাস্তব কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। যদিও শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জনের কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, তাই জীবনভর তা অর্জনের মাধ্যমে আরো বড় সাফল্য অর্জন করতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দীন খান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য শিরীন পারভীন হক ও বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.আবুল হোসেন ও শিক্ষার্থীরা সহ আরো অনেকে।
এবারের সমাবর্তনে ৭৭২৭ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন এবং ২৪৭৮ জন রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট অংশ গ্রহণ করেন।
সবশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে আয়োজিত ৪র্থ সমাবর্তনের সমাপ্তি হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর