• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ ঘন্টা পূর্বে
আবু হাসান শেখ
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:১৯ রাত
bd24live style=

সিঙ্গাপুরে বসবাস, তবুও বিদ্যালয়ে কর্মরত!

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

থাকেন সিঙ্গাপুরে কিন্তু চাকুরী করেন দেশের একটি বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে। ওই বিদ্যালয়টির নাম মাগুড়া দোলাপাড়া আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাগুড়া দোলাপাড়া গ্রামে। যদিও ওই প্রবাসী সিঙ্গাপুরে অবস্থান করেন তবুও তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বোন প্রধান শিক্ষক হওয়ায় বোনের কারিশমায় প্রবাসে বসবাস করেও বহালতবিয়তে রয়েছেন ওই অফিস সহায়ক। প্রতি মাসের এমপিও সিটে ওই অফিস সহায়ক মেহেদী হাসানের বেতনও আসছে। এমনকি অনুপস্থিতির বিষয়টি আড়ালে রেখেছেন প্রধান শিক্ষিকা।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে গত ২০২৩ সালের ৯ ই নভেম্বর যোগদান করেন মেহেদী হাসান। সে এমপিও ভুক্ত কর্মচারী হন ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল। যদিও তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের মাত্র দুই মাসের মাথায় পাড়ি জমান সিঙ্গাপুরে। তবে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমানোর পড়ে ওই অফিস সহায়ক এমপিও ভুক্ত হয়। এমপিও ভুক্ত হওয়ার পড়েও তিনি বিদ্যালয়ে অবস্থান না করেও রয়েছেন কর্মচারীর তালিকায়। এমনকি প্রতিমাসের এমপিও সিটে তার বিল বেতন নিয়মিত আসছে।

এছাড়াও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করলেও বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করা হচ্ছে। মূলত তার বোন তানজিনা আক্তার লাইজু বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও তার বোন জামাই শাহ আলম বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি হওয়ায় এ সুবিধা পেয়ে আসছেন মেহেদী হাসান।

আরও অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টি ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়টি গত ২০২৩ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোছা. তানজিনা আক্তার লাইজু ও তার স্বামী বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শাহ আলম প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের বাদ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুন করে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেয়া শুরু করেন। পরে যে সকল শিক্ষক কর্মচারী তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে পেরেছে তাদের এমপিও ভুক্ত করেছেন। যারা টাকা দিতে পারেননি তাদের এমপিও ভুক্ত করা হয়নি। বিদ্যালয়ের ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ৪ জন শিক্ষক এমপিও ভুক্ত হন। অন্যদিকে কর্মচারী ৬ জনই এমপিও ভুক্ত হয়েছেন। যে ৬ জন কর্মচারী এমপিও ভুক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন মেহেদী হাসান। এ নিয়ে বিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। 

অপর দিকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার লাইজু ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শাহ আলম উভয় মিলে মাহাবুল ইসলাম নামে একজনের কাছে ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে নিয়োগ দেন। ওই নিরাপত্তাকর্মী এমপিও ভুক্ত হওয়ায় সাবেক সভাপতি তার কাছে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করায় তিনি  ওই নিরাপত্তাকর্মীকে মামলার ভয় দেখান। নিরাপত্তাকর্মী মাহাবুল কোন উপায় না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রধান শিক্ষিকা ও সাবেক সভাপতির নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যা শুনানীর জন্য উভয়পক্ষকে উপস্থিত হওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে একটি পত্র দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে গত নভেম্বর মাসের এমপিও সিটে দশ জনের বিল ছাড় হলেও রহস্য জনক কারণে মেহেদী হাসান ছাড়াও আরও একজনের বিল উত্তোলন করা হয়নি। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আট জনের নামে বিল বেতন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাগুড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিঠু বলেন, আমি যতটুকু জেনেছি মেহেদী হাসান বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। সে প্রধান শিক্ষকের ভাই। এ অভিযোগসহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি আমাকে জানান, নিয়োগের দুই মাস পরেই মেহেদী হাসান সিঙ্গাপুর চলে যায়। প্রধান শিক্ষক আমাকে আরও জানায়, মেহেদী হাসান এমপিওভুক্ত হলেও তার নামে বিল করা হয়নি।

হাজিরার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার লাইজুর কাছে হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তিনি বলেন, হাজিরা খাতায় বাড়িতে রেখে এসেছি। বিদ্যালয়টির অফিস সহায়ক মেহেদী হাসান সিঙ্গাপুরে থাকেন এ রকম অভিযোগ উঠেছে প্রশ্ন করা হলে প্রথমে তিনি নিশ্চুপ থাকলেও পড়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সে যোগদানের দুই মাসের মাথায় সিঙ্গাপুরে গেছে। তার নামে কোনো বেতন করা হয়নি। মেহেদী হাসান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত অথচ তার এমপিও সিটে বেতন আসছে এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি এর কোন সত্তর না দিয়ে নিশ্চুপ হয়ে থাকেন। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন আমার স্বামী বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি শাহ আলমের সাথে কথা বলেন।

বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষিকা তানজিনা আক্তারের স্বামী শাহ আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকরা সিন্ডিকেট করে অপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, ভাই আমি মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের রুমে আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছি। আপনারা আসেন বিষয়টি মিটিয়ে ফেলি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসরাফ-উজ-জামান সরকারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ওই বিদ্যালয়ের বিষয়ে অনেক অভিযোগ শুনেছি। অফিস সহায়ক মেহেদী হাসান সিঙ্গাপুরে থাকেন শুনেছি। প্রবাসে বসবাস করেও প্রতি মাসে এমপিও সিটে বিল আসছে এবং কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি প্রশ্ন করা হলে এ অফিসার সাংবাদিকদের জানান- বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি আমার জানা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

ওই বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রবাসে থেকে বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে থাকার কোন বিধান নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, ওই বিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী মাহাবুল ইসলাম চেক সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটির শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com