• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২৪ সেকেন্ড পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৩:১১ দুপুর
bd24live style=

জলবায়ু উদ্বাস্তু এলাকাবাসীকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা করা হয়েছে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

আইএসপিআরের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার জেলা সংগঠক এস এস সাগর বলেন, ‘একটি যৌথ সংঘর্ষের ঘটনায় ভিটে রক্ষার চেষ্টা করা জলবায়ু উদ্বাস্তু এলাকাবাসীকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা করা হয়েছে।’

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এলাকাবাসীর ব্যানারে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এমন মন্তব্য করেন তিনি। এসময় কক্সবাজার বিমান বাহিনীর ঘাঁটির বাইরে এলাকাবাসীর সঙ্গে বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনায় আইএসপিআরের প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জনতা।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বর্ণনা করা ‘দুর্বৃত্তদের হামলারও’ প্রতিবাদ করেন সাগর। তিনি বলেন, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কারণ তাদের এই অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্যের কারণে একটি কমিউনিটিকে সন্ত্রাসী রূপ দেওয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসী হিসেবে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এলাকাবাসী ও সাংবাদিকরা জানেন বিষয়টা আসলে কী হয়েছে। আইএসপিআরের বক্তব্য এক নম্বর ওয়ার্ডবাসীর সঙ্গে আমিও প্রত্যাখ্যান করছি।

সাগর বলেন, আমরা খবর পেয়ে সেখানে যাই। গিয়ে দেখি অবস্থা খুবই বেগতিক, সাংঘর্ষিক অবস্থা চলে এসেছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে ভেতরে প্রবেশ করি। আমরা একজন নিহতের কথা জানতে পারি।

ভবিষ্যতেও ‘ন্যায়ভিত্তিক’ আন্দোলনে কক্সবাজারবাসীর সঙ্গে থাকার কথা তুলে ধরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা সাগর সোমবারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

সোমবার সকালে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিমান ঘাঁটি সংলগ্ন সমিতি পাড়া এলাকার লোকজনের সঙ্গে বিমান বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়ান। সেসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে গুলিও ছোড়া হয়। এসময় শিহাব কবির নাহিদ নামে এক তরুণ ব্যবসায়ী গুলিতে নিহত হন।

আইএসপিআর তখন এক বার্তায় জানায়, ‘বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতি পাড়ার কিছু দুর্বৃত্ত বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’

প্রথম বার্তায় হতাহতের কথা না বললেও শেষে দেওয়া আরেক বার্তায় তাদের গুলিতে নাহিদ নিহতের বিষয়ে মিথ্যাচার করার কথা উল্লেখ করা হয়। আইএসপিআর দাবি করে, তারা বেআইনি জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি করেছে। এতে মানুষ মারা যাওয়ার কথা নয়। এরপরও এলাকার ওই তরুণের মৃত্যুতে তারা শোক প্রকাশ করে।

নিহত শিহাব কবির নাহিদ (৩০) সমিতি পাড়ার বাসিন্দা পিটিআইর সাবেক সুপার মাস্টার নাছির উদ্দিন ও সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমেনা খাতুনের ছেলে। শিহাবের তিন বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। সোমবার রাতে কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা শেষে মরদেহ দাদাবাড়ি রামুতে নিয়ে যাওয়া হয়।

শিহাবের মা সাবেক প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা আমেনা খাতুন এবং বাবা নাসির উদ্দিন হাসপাতালে আহাজারি করে বলছিলেন, বিমান বাহিনী তাদের ছেলের মাথায় গুলি করেছে। পরিবারের পক্ষে মামলা করা হবে কি না পরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান মা আমেনা।

তবে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এসএম সোহেল বলেন, মাথায় আঘাত রয়েছে। গুলিতে মারা গেছেন কি না তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, শুনেছি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে একজনের মরদেহ রয়েছে। তবে কোন ঘটনায় তা সঠিক উল্লেখ নেই। আরও কয়েকজন আহত রয়েছেন, যারা চিকিৎসাধীন।

সংবাদ সম্মেলনে হামলার বিষয়ে স্থানীয় জামায়াত নেতা মাওলানা ফোরকানুল রশিদ বলেন, ‘কসম কেটে বলছি, আমার এলাকার মানুষ এমন না। তারা আইনশৃঙ্খলা মেনে শান্তিতে চলতে পছন্দ করে।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ‘নিয়মের বাইরে গিয়ে এলাকাবাসীকে বিমান বাহিনী উচ্ছেদ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এতে এক নম্বর ওয়ার্ডের সমিতি পাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়া এলাকার কয়েক হাজার মানুষ উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছে। এ থেকে রক্ষায় স্থানীয় জাহেদুল ইসলাম নামে শিক্ষানবিশ এক আইনজীবীসহ বেশ কয়েকজন তরুণ নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ করে আসছেন। এরই জেরে জাহেদকে কিছুদিন ধরে ‘থ্রেট’ দেওয়ার কথা দাবি করেন তার সহকর্মী খোরশেদ আলম ও সেজান এহসান। এরই জেরে সোমবার শহরে যাওয়ার পথে জাহেদকে রাস্তার চেকপোস্ট থেকে ধরে ঘাঁটির অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে তাকে ছাড়াতে স্থানীয় লোকজন সেখানে গেলে তর্কাতর্কির পরই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘জাহেদ ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আমরা তাকে উদ্ধার করতে যাই। আমরা বলেছি, আমাদের ভাইকে ফেরত দেন। আমরা কোনো হামলা করিনি।’

জাহেদকে দুপুরের পর স্থানীয় ‘রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের অনুরোধে’ ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে অচেতন অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তার চাচা আক্তার আহমেদ।

‘উচ্ছেদ বিরোধী’ আন্দোলনের সংগঠক দিদারুল ইসলাম রুবেল বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান। তবু বিমান বাহিনী কেন এমন ঘটনা ঘটালো এর তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার চাই। একটি তাজা প্রাণ ঝরে যাওয়া দুঃখজনক। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় আমাদের ভিটেমাটি রক্ষা করতে চেয়েছি, বেআইনি কিছু চাইনি।

সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে মামলা করার কথা বলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা এজাজুল্লাহ কুতুবী।

তবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় বিমান বাহিনী বা এলাকাবাসী কারো পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান।

সমিতি পাড়ায় কী ঘটেছে, সে বিষয়ে বিমানবাহিনীর ভাষ্য তুলে ধরা হয়েছে আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

তারা বলেছে, ‘কক্সবাজারে অবস্থিত বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতি পাড়ার কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্ত সোমবার (২৪-২-২০২৫) তারিখে বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য যে, বিয়াম স্কুলের পাশে বিমান বাহিনীর চেকপোস্ট থেকে একজন স্থানীয় লোকের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় বিমান বাহিনীর প্রভোস্ট কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় সমিতি পাড়ার আনুমানিক দুই শতাধিকেরও বেশি স্থানীয় লোকজন বিমান বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমান বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে বাধা দেয়।

পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিমান বাহিনীর চেকপোস্ট এলাকায় বিমান বাহিনীর সদস্য ও সমিতি পাড়ার কতিপয় দুষ্কৃতকারী লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে কতিপয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা বিমান বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট পাটকেল ছোড়ে। এ সময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন, যার মধ্যে বিমান বাহিনীর ৪ জন সদস্য (১ জন অফিসার ও ৩ জন বিমানসেনা) আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমান বাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।’

‘উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমান বাহিনীর সদস্যগণ কর্তৃক বিমান বাহিনীর Rules of Engagement অনুযায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়, তবে স্থানীয় জনসাধারণের উপর কোন প্রকার তাজা গুলি ছোড়া হয়নি। বিমান বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, স্থানীয় জনগণের ইটপাটকেলের আঘাতে বিমান বাহিনীর গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল যা পরবর্তীতে বেশি সম্প্রসারিত হয়নি।’

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com