
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় বৃদ্ধকে মারধর এবং দুই নারীকে শারীরিক হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃদ্ধ বাদী হয়ে মামলা করলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এবং ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে ভীতি কাজ করছে।
উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা বেপারীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই সময় গুরুতর আহত হন মো. আনোয়ার আলী (৮৩), রফিকুল ইসলাম এর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪৮), নুরুল ইসলামের স্ত্রী পারভীন আক্তর (৪০)।
জানা যায়, পারিবারিক রাস্তা সংস্কারের জন্য চলতি মাসের ১৬ তারিখ রাতে প্রতিবেশীর একত্রিত হন। সেখান থেকে বিভিন্নজন নানা সিদ্ধান্তে আসেন। সিদ্ধান্তের এক পর্যায়ে সবার শেষ করে চলে যেতে লাগলে আনোয়ার আলীর উপর অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিবেশী আলম বেপারীর ছেলে মেহেদী (২৪) এবং বাবুল শিকদারের ছেলে জুয়েল শিকদার (৩৫)। বৃদ্ধকে বাঁচাতে পরিবারের নারী সদস্যরা এগিয়ে আসলে তারাও শিকার হন মারধরের। এর এক পর্যায়ে মাজেদা বেগমের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় তারা। আশপাশের লোকজনের উপস্থিতিতে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রাখা হয়।
প্রতিবেশী মজ্জেল সিকদারের বাড়িতে রাস্তা সংস্কারের জন্য বসেছিলেন বাসিন্দারা। কথা হয় তার সাথে তিনি জানান, আনোয়ার আলী আমাদের মুরুব্বি তিনি রাস্তার জন্য সাত হাজার টাকা দিতে চেয়েছেন। সকলকেই সামর্থ্য মতো চাঁদা ধরা হয়েছে। রাস্তা ভরাটের জন্য মাটি কোথা থেকে আনব এ নিয়ে বাজে কথা কাটাকাটি। আনোয়ার আলীর পুকুর থেকে মাটি তুলে রাস্তা ভরাটের কথা বললে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তিনি সাত হাজার টাকা দিতে পারবেন প্রয়োজনে আরো দেবেন জানিয়ে সবার থেকে উঠে পড়েন। আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তাকে বাঁচাতে তার পরিবারের লোকজনও আহত হয়েছে। এই ঘটনা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।
ভুক্তভোগী নারী মাজেদা বেগম বলেন, মিয়া ভাই কে মারছে শুনে আমরা এগিয়ে যাই। বৃদ্ধ মানুষটাকে বাঁচাতে গিয়ে বেধরক মারধরের শিকার হয়েছি। হেনস্তা করা হয়েছে, টানা হেঁচড়া করা হয়েছে এরপর ছিনিয়ে নিয়ে গেছে আমার গলার স্বর্ণের চেইন। বৃদ্ধ মানুষ এবং মেয়ে মানুষের গায়ে হাত তুলে এখন তারা এলাকা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেশে কি আইন নেই তাদেরকে বিচার হবে না। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
পারভিন আক্তার নামের অপর ভুক্তভোগী বলেন, সাত দিন হয়ে গেছে এখনো কাউকে পুলিশ ধরেনি। পুলিশ তাঁদের না ধরাতে আমরা শংকায় আছি। আবারো যেকোনো সময় করতে পারে দুর্ঘটনা। আমরা চাই দ্রুত দোষীদের বিচার হোক।
আনোয়ার আলী বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তারা আমার সাথে এমনটা করেছে। আমি দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করি।
এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুমিন খান বলেন, 'এই ঘটনা মামলা হয়েছে। আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি আদালতে রিপোর্ট পাঠানো হবে।'
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর