
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের নার্সিং কোয়ার্টারের চার্জে দেওয়া স্যামসাং কোম্পানির একটি স্মার্টফোন বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের বাউন্ডারির ভেতরে ডাক্তার ও নার্সদের জন্য একাধিক কোয়ার্টার ভবন রয়েছে। সেখানে যমুনা নামে একটি নার্সিং কোয়ার্টার ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসিমা আক্তার ও তার পরিবার। ঘটনার দিন সকাল ৮টায় নাসিমা আক্তার সদর হাসপাতালে ডিউটিতে যান। এসময় বাড়িতে তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে ছিলেন।
জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে নার্স নাসিমা আক্তারের বাসার একটি কক্ষে চার্জে থাকা মোবাইল বিস্ফোরণে লেপ তোশকে আগুন ধরে যায়। কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয় পাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দারা। খবর পেয়ে শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে বাসার এসি, খাট, কম্বল, আসবাবসহ প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল আগুনে পুড়ে যায়।
নাসিমা আক্তার বলেন, ‘আমি সকাল ৮টায় ছেলেকে বাসায় রেখে সদর হাসপাতালে ডিউটিতে যাই। ১২টার দিকে খবর পাই বাসায় আগুন লেগেছে। বাসায় শুধু আমার ২২ বছরের কলেজ পড়ুয়া ছেলে ছিল। এক রুমে মোবাইল চার্জে রেখে অন্য রুমে ছেলে ঘুমাচ্ছিল। মোবাইল বিস্ফোরণে রুমে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে আমি দ্রুত বাসায় আসি। আগুনে আমার বাসার এসি, আসবাবসহ প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
কোন মোবাইল বিস্ফোরণ হয়েছিল জানতে চাইলে বিডি২৪লাইভকে নাসিমা বলেন, ‘আমার স্বামী কয়েক বছর আগে স্যামসাং কোম্পানির একটি স্মার্টফোন কিনে দেন। সেই মোবাইলটিই বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে আমাদের বিরাট বড় ক্ষতি হয়েছে। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই।’
নাসিমা আক্তারের স্বামী হুমায়ুন আহমেদ বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন বিস্ফোরণ সত্যিই ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় সময়েই এমন ঘটনা চারপাশে ঘটছে। এমনকি মানুষের মৃত্যুর খবরও মিলছে। আল্লাহ আমাদের পরিবারকে রক্ষা করেছেন। আমি মনে করি, মোবাইল বিস্ফোরণের ঘটনায় কোম্পানিগুলো কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না।’
শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শ্যামল বিশ্বাস বলেন, ‘মোবাইল বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাতের আলামত পাওয়া গেছে। তদন্ত করলে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যবে।’
উল্লেখ্য, এর আগেও ২০২৪ সালে গাজীপুরের টঙ্গীতে স্যামসাংয়ের মোবাইল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পায় আড়াই বছরের এক শিশু।
এছাড়া ২০১৬ সালে গ্যালাক্সি ৭ সেভেনের ব্যাটারিতে আগুন ধরার অভিযোগে স্যামসাংকে বিপুল ক্ষতির মুখে পরতে হয়। এসময় তাদেরকে প্রায় ২৫ লাখ ডিভাইস ফেরত নিতে হয়। সে অবস্থা থেকে কোম্পানিটির ঘুরে দাঁড়াতে বেশ বেগ পেতে হয়।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর সর্বশেষ খবর