
প্রাপ্ত বয়স্ক, সক্ষম নারী পুরুষের জন্য রোজা রাখা ফরজ। এই বিধান পালনে গড়িমসির কোনো সুযোগ নেই। রোজাদারকে আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে পুরস্কার দেবেন। ইসলামের অন্য কোনো বিধানের ক্ষেত্রে এমন নজির নেই, যার পুরস্কার আল্লাহ তায়াল নিজ হাতে দেবেন।
আল্লাহ তায়ালার হাতে পুরস্কার লাভের এমন সুযোগ কারো হাতছাড়া করা উচিত নয়। তাই কোনো অবহেলা বা খামখেয়ালির কারণে রোজা রাখা থেকে বিরত থাকা যাবে না। রোজার মাসে সহজে রোজা রাখার জন্য প্রায় সবাই নিজেদের ভারী কাজ কমিয়ে দেন।
অনেকেই নিজের অধীনস্ত কর্মচারীদের কাজের বোঝাও কমিয়ে দেন। যারা রমজানে কর্মচারীর কাজ কমিয়ে দেন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বিশেষ পুরস্কার দেবেন।
রাসূল সা. বলেছেন, রমজানে যে ব্যক্তি তার অধিনস্তদের কাজ হালকা করে দিবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন। (শুআবুল ইমান; বায়হাকি)
আমাদের সমাজে শ্রেণী ভেদে সবারই কর্ম-পেশা ভিন্ন ভিন্ন। অনেকের কাজকর্মে শারীরিক পরিশ্রম কম হয়। মেধার পরিশ্রম বেশি হয়। আবার অনেকের মেধার পরিশ্রম কম হয়, শারীরিক পরিশ্রম বেশি হয়— যেমন, রিকশা চালক, ইটভাটায় কাজ করা লোকজনের শারীরিক পরিশ্রম অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি হয়।
এমন আরও অনেক পেশার মানুষ আছেন, যাদের অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়। এই পেশার মানুষদের জন্য রোজা রাখা কঠিন। রমজান মাসে তাদের করণীয় বিষয়ে জানতে চেয়ে একজন প্রশ্ন করেছেন—
‘জনৈক ব্যক্তি দরিদ্র। তার একা কাজ করে ১০ জন মানুষকে খাওয়াতে হয়। যদি সে কাজ না করে, তাহলে ১০ জন মানুষকে না খেযে থাকতে হয়। এদিকে সে রোজা রেখে কাজ করতে অক্ষম। এখন তার করণীয় কী?’
এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইসলামী ফেকাহবিদেরা বলেন, ইসলামের মৌলিক বিধানে মধ্যে অন্যতম রোজা। যা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মুকীম ব্যক্তির জন্য ফরজে আইন। কোনো ব্যক্তি ভারী কাজ বা প্রশ্নে উল্লেখিত পরিস্থিতির মতো কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে তার জন্য করণীয় হলো—
রমজান মাস আসার আগেই রমজানের প্রস্তুতির জন্য এমন কোনো পেশা বেছে নিতে হবে, যে কারণে তার আর রোজা রাখতে কষ্ট না হয়। অথবা কাজের সময় পরিবর্তন করে নিতে হবে। আগে পুরো দিন কাজ করলে এখন সময় পরিবর্তন করে সকাল ও রাতে কাজ করার চেষ্টা করবেন।
যদি এমন কোনো বিকল্প ব্যবস্থা বের করা সম্ভব না হয় তাহলে রোজা রেখে কাজ শুরু করবেন এবং যতক্ষণ সম্ভব রাখার চেষ্টা করবেন। তবে যখন অক্ষম হয়ে পড়বেন তখন ভেঙে ফেলবেন। এভাবে যতগুলো রোজা ভাঙা হবে পরবর্তীতে সেগুলোর কাজা করে নিতে হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর