
ময়মনসিংহের ভালুকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শাবাব ফেব্রিকস লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা উপজেলার হাজির বাজার এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা।
এ সময় চার লেনের মহাসড়কের দুইপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দূর পাল্লার যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। মহাসড়ক অবরোধের সংবাদ পেয়ে, স্থানীয় প্রশাসন, ভালুকা মডেল থানা পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে তাদের অবরোধ তুলে নেয়। পরে মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, ভালুকা সদর ইউনিয়নের বাশিল গ্রামের “শাবাব ফেব্রিকস লিমিটেড” নামের পোশাক কারখানাটিতে প্রায় সাড়ে ৫শ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসসহ তাদের তিন মাসের বেতন বকেয়া। ফলে, তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। তাদের অনেকেই পরিবারপরিজনসহ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। তিন মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তাদের বাসা ভাড়া, দোকান বাকী বকেয়া পড়ায় অনেক চাপে রয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধে বারবার তারিখ করে হলেও পরিশোধ করছেন না। বৃহস্পতিবার তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য তারিখ নির্ধারণ ছিল। কাজ শেষে বেতনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন শ্রমিকরা। পরে তাদের জানানো হয়, হেডঅফিস থেকে টাকা পাঠানো হয়নি। আগামী সপ্তাহে বেতন পরিশোধ করা হবে। এ সময় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। প্রথমে তারা কারখানা গেটের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে কারখানা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা উপজেলার হাজির বাজার এলাকায় এসে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিকরা আরও জানান, এর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের নভেম্বর মাসের বকেয়া বেতন তিন কিস্তিতে পরিশোধ করেছেন এবং প্রায় মাসেই সময়মতো তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করছেন না কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে, নাম ও পদবি প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, কারখানাটির শুরুতেই কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার দিয়ে আসছিলেন। চলমান পরিস্থিতিতে রপ্তানি কর্তৃপক্ষগণ কয়েক মাস যাবৎ নতুন কোনো অর্ডার না দেওয়ায় কারখানাটি বর্তমান পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামসুল হুদা খান জানান, মডেল থানা, সেনাবাহিনী ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করে, মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ তুলে নেয়ার অনুরোধ করলে, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে তাদের অবরোধ তুলে নেয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর