
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে হামলা করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি ছিনতাই করেছে স্থানীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে মামলার তিন নম্বর আসামি ইসমাইলকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর ছিনতাই’র ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতসহ মোট ১৬জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এই ঘটনার চারদিন পার হলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে ধর্ষণ মামলার আসামি ইসমাইলের খোঁজ পায়নি পুলিশ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া।
ঢালচর তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) আনোয়ার হোসেন জানান, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচরের একটি ধর্ষণকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে ২৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে দক্ষিণ আইচা থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ওই দিন রাতে ঢালচর তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ধর্ষণ মামলার ৩নং আসামি ইসমাইলকে (২২) তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে আসেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢালচর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহ আলম ফরাজী, সহ সভাপতি মোক্তার ফরাজি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি ফেরদাউস, জিয়া পরিষদের সভাপতি মামুনের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপির একাংশের শতাধিক কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভ মিছিল করে তদন্তকেন্দ্রে ঢুকে ইসমাইলকে ছিনিয়ে নেয়। পুলিশ হেফাজত থেকে আসামি ছিনতাইয়ের এই ঘটনায় তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন। মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ এবং ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, পুলিশের কাছ থেকে ধর্ষণ মামলার আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। আসামীদেরকে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর এক যুবতীর সঙ্গে ঢালচর ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সোলাইমানের ছেলে ইসমাইলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ৬ মার্চ গভীর রাতে প্রেমিক ইসমাইলের ডাকে সাড়া দিয়ে ভুক্তভোগী ঘর থেকে বের হন। এরপর ইসমাইল ভুক্তভোগীকে মুখ চেপে পাশের মেঘনা নদীর তীরের খোলামাঠে নিয়ে যান।
সেখানে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা লোকমান হোসেন এলাহীর ছেলে নিবিড় (২১), আলাউদ্দিনের ছেলে আক্তার (২০), নুরে আলম দালালের ছেলে শরীফ (১৯) এবং গণি মাঝির তুলা ছেলে মনির (২৫ ) ভিক্টিমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং ধর্ষণকান্ডের ভিডিও ধারণ করে।
সেই ধর্ষণকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করার এক বছর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আইচা থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে ওই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর