
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার তেলির চালা এলাকায় লগুজ এপারেলস লিমিটেড কারখানার ঝুট (পরিত্যক্ত মালামাল) ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে সংঘর্ষের পর থেকে কারখানা এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে মৌচাকের লগুজ এপারেলস কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ শূন্য অবস্থায় ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুর জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম এবং কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সদস্য হারুন অর রশিদ—উভয়েই এই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
শনিবার সকাল থেকেই দুই পক্ষের সমর্থকরা কারখানার সামনে একাধিকবার মহড়া দেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। দুই পক্ষই লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়, এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ বলেন, "লগুজ এপারেলস কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।
কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, "উপজেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৌচাকের লগুজ কারখানার ঝুট ব্যবসা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে গোপনে কারখানা থেকে ঝুট বের করার চেষ্টা করলে আমরা বাধা দিই। তখন তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়, এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়।"
অন্যদিকে, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম বলেন, "কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের লোক মোশারফ হোসেনের নামে ঝুটের মালামাল ডিউ (বরাদ্দ) করেছে। কিন্তু মালামাল বের করতে গেলে হারুন অর রশিদ ও তার সমর্থকরা বাধা দেয়।
একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে, যা সংঘর্ষে রূপ নেয় এবং কয়েকজন আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।"
সংঘর্ষের ঘটনায় তেলির চালা এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, যে কোনো সময় পুনরায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর