কসবায় স্ত্রী ও শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (২ মার্চ) রাতে উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ধ্বজনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো ধ্বজনগর গ্রামের মৃত রৌশন মিয়ার মেয়ে জোতি আক্তার (২০) এবং স্মৃতি আক্তার (১৩)।

নিহত জোতি আক্তারের স্বামী ছামিউল ইসলাম ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। দুই বোনের হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহতদের চাচি জরিনা বেগম বলেন, দেড় বছর আগে পাশ্ববর্তী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা জামতলী গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে ছামিউল ইসলামের সাথে জোতি আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়িতে মানসিক নির্যাতনের শিকার ছিলেন জোতি। এক মাস আগে জোতি স্বামীসহ বাপের বাড়ি বেড়াতে আসে। স্বামী কয়েকদিন থেকে জোতিকে বাবার বাড়ি রেখে চলে যায়।

এক সপ্তাহ আগে জোতির স্বামী ছামিউল ইসলাম আবারও শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসে। সোমবার (৩ মার্চ) সকালে জোতির ছোট ভাই জাহিদ মিয়া (১১) ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায় তার দুলাভাই ঘরে নেই। পরে বড় দুই বোনকে ঘুম থেকে ডাক দেয়। তাদের কোনো সাড়া না পেয়ে জাহিদ আমাকে ডেকে আনে। আমি এসে দেখতে পাই খাটের উপর দুই বোনের মৃতদেহ পড়ে আছে। তাদের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। তাদের ঘরের আলমারি খোলা ছিল এবং আলমারিতে থাকা অলংকার ও টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে গেছে ছামিউল। তাদের আর্তচিৎকারে প্রতিবেশিরাও ছুটে এসে দেখে, কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখা দুই বোনের মৃতদেহ। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

নিহতদের ছোট ভাই জাহিদ মিয়া জানান, তার দুলাভাই দুই বোনকে হত্যা করে আলমারি থেকে টাকা, অলংকার, মোবাইল এবং তার দুই বোনের কান ও গলায় থাকা অলংকারও নিয়ে পালিয়ে গেছে। বোনদের হারিয়ে তিনি একপ্রকার বাকরুদ্ধ। তিনি এই হত্যার বিচার চান।

কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল কাদের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দুই বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘাতক স্বামী ছামিউল ইসলাম পালিয়ে গেছে। তাদের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পলাতক ছামিউলকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

সালাউদ্দিন/সাএ