
বাংলাদেশে এবার কোটা বিরোধীরাই কোটার সুবিধা ভোগ করবে বলে সরব ভারতীয় গনমাধ্যম। আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসন সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যের জন্যে যে ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা আছে, তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেন গণঅভ্যুত্থানকারীদের পরিবারও।
কোটার বিরোধিতায় ২০২৪ সালের জুলাই মাসে উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই আন্দোলন পরে গিয়ে 'হাসিনা বিরোধী' আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। এই আবহে ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেছিলেন। মহম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা হতে রাজি করিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন আন্দোলনকারী এবং বিশিষ্ঠজনেরা। তবে যে কোটার বিরুদ্ধে এত কাণ্ড, সেই কোটার সুবিধা ভোগ করবেন হাসিনা বিরোধী আন্দোলনকারীরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসন সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যের জন্যে যে ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা আছে, তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেন গণঅভ্যুত্থানকারীদের পরিবারও। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলায় 'ধর্মনিরেপক্ষ' ইউনুসের ঘাড়ে দায় চাপালেন অমর্ত্য)
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার সদস্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩০ শতাংশ কোটা। এর আগে ২০১৮ সালে এই কোটা ব্যবস্থা তুলে দিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিল শেখ হাসিনা সরকার। পরে সেই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে বাংলাদেশ হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন ৭ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। এই আবহে ২০২৪ সালের ৫ জুন হাই কোর্টে হাসিনা সরকারের নির্দেশিকা বাতিল হয়েছিল। এই আবহে সেদেশে শুরু হয়েছিল কোটা বিরোধী আন্দোলন। (আরও পড়ুন: ব্রাত্য বসুর গাড়ির তলায় 'চাপা পড়া' ইন্দ্রানুজের নামে ৩ FIR, অভিযোগ কী কী?)
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ঐতিহাসিক রায় দিয়ে জানিয়েছিল, বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ নয় বরং ৭ শতংশ সংরক্ষণ থাকবে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য ৫ শতাংশ, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যে ১ শতাংশ এবং বিশেষ ভাবে সক্ষ ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্যে ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানায় শেখ হাসিনা সরকার। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণের আওতায় ছিল। বাকি ৪৪ শতাংশ আসন ছিল সাধারণ চাকরিপ্রার্থী ও পরীক্ষার্থীদের জন্য। এদিকে সুপ্রিম রায়ে সংরক্ষণ ৫৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এলেও তখন আর আন্দোলন বন্ধ করেননি নাহিদরা। ততদিনে সেই আন্দোলন আর কোটা বিরোধী ছিল না। তা হয়ে দাঁড়ায় সরকার বিরোধী আন্দোলনে। তবে যেই কোটার বিরোধিতায় আগুন জ্বলল বাংলাদেশে, এখন সেই কোটার সুবিধা পেতে উদ্যোগী কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরাই।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর