
ভারত থেকে গরু না আসলে গরুর গোস্তের কেজি ৪ হাজার টাকায় খেতে হতো বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
আজ মঙ্গলবার আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান হোসেনের জামিন শুনানিতে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে অর্থপাচার আইনের এ মামলায় জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম অর্গানাইজডের পুলিশ পরিদর্শক ছায়েদুর রহমান ইমরান হোসেনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষে শুনানিতে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘মামলার এজাহার পড়লাম। মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধের কোনো সেনটেন্স পেলাম না। তার দুর্ভাগ্য, তবে গরুর সৌভাগ্য। কারণ কোটি টাকার ওই গরুর সাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি তুলেছিলেন। আর এসব কিছু উনার কপাল পোড়ার জন্য যথেষ্ট। আগাগোড়া পরিশ্রম করে মানুষটা (ইমরান হোসেন) এখানে এসেছেন। তার সংস্পর্শে আসার পর দেখলাম সৎভাবে ব্যবসা করা যায়। ১৯৫২ সাল থেকে জালালাবাদ মেটাল নামক প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছেন। এর মালিক তার চার ভাই। এত বছরে ১৩৩ কোটি লেনদেন অস্বাভাবিকের কিছু না।’
তিনি বলেন, ‘সামনে কোরবানি। ওই সময় সবচেয়ে ভালো ব্যবসা করবেন। ভালো ভালো গরু কিনবেন। ভাবেন যদি ভারতের গরু সাপ্লাই বন্ধ, উনারা গরু সাপ্লাই বন্ধ করে দেন। তাহলে গরুর দাম কেমন হবে। ভারত থেকে গরু না আসলে কোরবানি হয় না। কোরবানির সময় গরু কিনতে গেলে আমি জিজ্ঞাসা করি, এটা মুসলমান না হিন্দু গরু। তাই ভারত থেকে গরু না আসলে গরুর গোস্তের কেজি খেতে হতো ৪ হাজার টাকা।’
মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘তিনি (ইমরান হোসেন) একজন ক্লিন হ্যান্ড মানুষ। উনি কিন্তু দেশের বাইরে ছিলেন। ক্লিন হ্যান্ড না হলে দেশে আসতেন না। তার যে কোনো শর্তে জামিনের প্রার্থনা করছি।'
শুনানিতে ঢাকা বারের বর্তমান অ্যাডহক সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘মামলায় কিছু নাই। অপদস্ত, ক্ষতি, মান-সম্মান নষ্ট, ব্যবসার ক্ষতির উদ্দেশ্যে তাকে (ইমরান হোসেন) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনো অপরাধ পাই নাই তার।
সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলায় কিছু না কিছু তো থাকতে হবে। এক পয়সাও মানিলন্ডারিং হলে জামিন দিয়েন না।’
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এটা একটা আলোচিত মামলা। ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ। একটি ছাগল ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। কে কেনেন? এনবিআরের মতিউর রহমানের ছেলে কেনেন ছাগলটা। যিনি হাসিনা সরকারের সুবিধা ভোগ করেছেন। আর যার কাছ থেকে কিনেছেন তিনিও হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী। ব্রাহমা জাতের গরু দেশে নিষিদ্ধ। তবুও গত সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে, চোরাচালানের মাধ্যমে গরু নিয়ে আসত সাদিক অ্যাগ্রো। এ অবৈধ ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থিতিশীল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক অবস্থায় মামলার তদন্ত চলছে। তারা (আসামিপক্ষ) এমনভাবে বলছেন মামলা যেন আজই শেষ করে দিন। মামলার তদন্ত চলছে। আরও তদন্তের জন্য তাকে রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে। জামিন পেলে তদন্ত ব্যাহত হবে। আসল বিষয় তদন্ত করতে পারবে না। তার জামিনের বিরোধিতা করছি।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। এর কিছু সময় পরই আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
আইন ও আদালত এর সর্বশেষ খবর